শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরা দিলেন চন্দন মণ্ডল।
টাকার বিনিময়ে বহু চাকরিপ্রার্থীকে তিনি সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর নামে উঠেছে একাধিক অভিযোগ। কিন্তু শুক্রবার হাই কোর্টে দাঁড়িয়ে বাগদার সেই ‘রঞ্জন’ ওরফে চন্দন মণ্ডল দাবি করলেন, তাঁর বিরুদ্ধে কী অভিযোগ, তা তিনি জানেন না। শুধু তাই নয়, চন্দনের আরও দাবি, তিনি কারও চাকরি দিতে পারেননি। এবং কারও কাছ থেকে টাকাও নেননি।
বেশ কিছু দিন আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাসের একটি পুরনো ভিডিয়ো সামনে আসে। সেখানেই ‘রঞ্জন’-এর কথা বলেন উপেন। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে বহু চাকরিপ্রার্থীকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন ওই ‘রঞ্জন’। আনন্দবাজার অনলাইন ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে ভিডিয়োটি যে তাঁরই, তা অস্বীকার করেননি উপেন। রঞ্জনের প্রকৃত নাম-ধামও সেই সময় প্রকাশ করেননি তিনি। যদিও পরে আদালতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আবেদনকারীরা প্রকাশ্যে আনেন রঞ্জনের আসল নাম চন্দন মণ্ডল।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানিতে হাই কোর্ট সম্প্রতি নির্দেশ দেয়, আদালতে হাজিরা দিতে হবে চন্দনকে। আদালতের নির্দিষ্ট করে দেওয়া দিন অনুযায়ী শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দেন চন্দন। টেট দুর্নীতি মামলায় তাঁকে সমন পাঠিয়েছিল আদালত। হাই কোর্টে চন্দন বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আমি জানি না। আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। চাকরি দিতেও পারিনি।’’
শুক্রবার আদালতে চন্দনকে দেখিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন উপেনকে। তিনি জানতে চান, ইনিই কি সেই ব্যক্তি, যাঁর নাম নিজের ভিডিয়োতে করেছিলেন উপেন? উপেন বলেন, ‘‘তিনি ব্যক্তি রঞ্জনকে চেনেন না। শুধু নাম জানতেন।’’ এর পর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বন্ধ খামে আদালতের হাতে তুলে দেন তিনি। তাঁর পরামর্শ, একটি নির্দিষ্ট দিন করে সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসারের উপস্থিতিতে আদালতের নজরদারিতে এই টেট দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত হোক। এর পরেই আদালত জানায়, উপেনের পেশ করা ওই তথ্যগুলি সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। সিবিআই পদক্ষেপ করবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, উপেনের দেওয়া তথ্য থেকে বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া যেতে পারে।
ঘটনাচক্রে, শুক্রবার যখন হাই কোর্টে হাজিরা দিতে এসেছেন চন্দন, সেই সময় তাঁর উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছিল এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট (ইডি)। সকাল ৯টা নাগাদ ইডি চন্দনের বাড়িতে যায়। তবে সেখানে তাঁরা কোনও তথ্য বা সূত্র পেয়েছেন কি না তা যদিও জানাননি ইডি আধিকারিকেরা।