বিমান দুর্ঘটনার সেই দৃশ্য। ছবি: রয়টার্স।
দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় বিমান দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়েছে ১৭৯ জনের। ‘ভাগ্যের জোরে’ বেঁচে গিয়েছেন ৩২ বছরের লি এবং ২৫ বছরের কওন! দু’জনেই ওই বিমানের কর্মী। কিন্তু সকলের মৃত্যু হলেও কী ভাবে প্রাণে বাঁচলেন তাঁরা?
কোরিয়ার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বিমানের একদম শেষ প্রান্তে বসেছিলেন লি ও কওন। পরিসংখ্যান বলছে, বিমানের শেষ প্রান্তের সিটগুলিই যে কোনও বাণিজ্যিক উড়ানের সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। আমেরিকার টাইম ম্যাগাজ়িনের ২০১৫ সালে প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যানে ৩৫ বছরের যাবতীয় বিমান দুর্ঘটনার তথ্য ঘেঁটে দেখানো হয়, বিমানের পিছন দিকের আসনগুলিতে বসলে দুর্ঘটনার পরেও মৃত্যুর হার তুলনায় কম থাকে। একদম শেষের আসনগুলিতে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩২ শতাংশ, মাঝের আসনগুলিতে ৩৯ শতাংশ এবং সামনের দিকের আসনে মৃত্যুর আশঙ্কা ৩৮ শতাংশ। তবে ওই রিপোর্টের দাবি, বিমানের পিছনের দিকের মাঝের আসনগুলিতে মৃত্যুর আশঙ্কা সবচেয়ে কম থাকে— ২৮ শতাংশ।
মুয়ানে বিমান দুর্ঘটনার পর যখন আগুন আর কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে চারদিক, তখনই বিমানের শেষ প্রান্ত থেকে কোনও মতে টেনে বার করা হয় লি আর কওনকে। তবে আকস্মিক ধাক্কায় দুর্ঘটনার সব স্মৃতি হারিয়েছেন প্রাণে বেঁচে যাওয়া দুই যুবক। কী ঘটেছিল ওই বিমানে, কোন অলৌকিক বলে প্রাণে বেঁচে গেলেন, কিছুই মনে করতে পারছেন না তাঁরা! হাসপাতালের কর্মীরা জানিয়েছেন, আঘাতের জেরে মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন লি। সোমবার তাঁর জ্ঞান ফিরেছে। কিন্তু জ্ঞান ফেরা ইস্তক আতঙ্কে রয়েছেন তিনি। ‘কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল?’ চিকিৎসকদের প্রশ্নের উত্তরে স্মৃতি হাতড়ানোর চেষ্টা করলেও কিছুই মনে করতে পারছেন না ওই যুবক। লি-র মতোই কিছুই মনে নেই কওনের। আপাতত কওনের অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। মাথায়, গোড়ালিতে এবং পেটে চোট পেয়েছেন তিনি। মাথার খুলিতেও চিড় ধরেছে।
রবিবার ভোরে দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ারের ওই বিমানটি ব্যাঙ্কক থেকে ফিরছিল। বিমানে ছিলেন ১৭৫ জন যাত্রী এবং ছ’জন বিমানকর্মী। মুয়ান শহরে অবতরণের সময়েই ঘটে দুর্ঘটনা। আচমকা বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে সমস্যা দেখা দেয়। সঠিক সময়ে চাকা না খোলায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি মাটিতে গিয়ে গোত্তা খায় বিমান। অনেকেই বলছেন, এটি দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে ‘অন্যতম ভয়ঙ্কর’ বিমান দুর্ঘটনা।