চন্দন মণ্ডল (বাঁ দিকে) ও তাঁর বাড়ি।
বাগদার সেই ‘রঞ্জন’ ওরফে চন্দন মণ্ডলের বাড়িতেও শুক্রবার সকালে পৌঁছল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পাঁচ জনের একটি তদন্তকারী দল উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় পৌঁছয়। ওই দলের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনীও ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ চন্দনের বাড়িতে পৌঁছন ইডির প্রতিনিধিরা। প্রাথমিক ভাবে বাড়ির গেট বন্ধ থাকায় ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। এর পর চন্দনের পরিবারের এক সদস্য এসে গেটের তালা খুলে দেন। তার পর ইডি বাড়ির ভিতরে ঢোকে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এই চন্দনের নামে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বছরখানেক আগে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিবিআইয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্তা উপেন বিশ্বাস একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেন। ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। সেখানে রঞ্জন নামে এক ব্যক্তির কথা সামনে আনেন তিনি। নিয়োগ দুর্নীতিতে রঞ্জনের ঘনিষ্ঠ যোগের কথা বললেও তাঁর আসল নাম জানাননি উপেন। পরে কলকাতা হাই কোর্টে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আবেদকারীরা জানান, বাগদার মামাভাগিনা গ্রামের চন্দনই আসলে সেই ‘রঞ্জন’। পরে এ বিষয়ে মুখ খোলেন বাগদার প্রাক্তন বিধায়ক দুলাল বর। দুলালের অভিযোগ, কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ— সব জায়গায় টাকার বিনিময়ে চাকরি দিয়েছেন চন্দন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল চন্দনের।’’ তিনি এ-ও বলেছিলেন, ‘‘স্থানীয় তৃণমূল নেতারা ওঁর (চন্দনের) বাড়িতে এসে ওঁকে তেল দিতেন। মুখ্যমন্ত্রীর ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় ওঁর পুজো উদ্বোধন করতে এসেছিলেন।’’
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলায় নাম জড়িয়ে যেতেই চন্দন ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিলেন। সিবিআইও তাঁর খোঁজ পায়নি বলে জানা যায়। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
ঘটনাচক্রে, বাগদায় যখন চন্দনের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে ইডি, তিনি তখন কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশে হাজিরা দিতে এসেছেন। আদালত আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, শুক্রবার তাঁকে এই মামলা হাজিরা দিতে হবে।