— প্রতীকী ছবি।
কাকভোরে বাড়িতে ঢুকে গৃহবধূর শ্লীলতাহানীর চেষ্টার অভিযোগ স্থানীয় তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ নিতে গড়িমসির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের দাবি, শাসকদলের ছত্রছায়ায় থেকেই বাড়বাড়ন্ত অভিযুক্ত নেতার। ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য বীরভূমের লাভপুর থানার বিষয়পুর গ্রামে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত পরিবার নিয়ে উধাও বলে জানা গিয়েছে।
বিষয়পুর গ্রামে বাড়ি পেশায় মৎস্যজীবী উত্তম ধীবরের (নাম পরিবর্তিত)। প্রতি দিন রাত ৩টে নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে নদীতে চিংড়িমাছ ধরতে যান তিনি। বাড়ি ফিরতে ফিরতে বেলা গড়িয়ে যায়। গত শনিবারেও রাতে ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। বাড়িতে তখন ঘুমোচ্ছিলেন উত্তমের স্ত্রী এবং তাঁদের দুই কন্যা। অভিযোগ, সেই সুযোগে অত ভোরে উত্তমের বাড়িতে ঢুকে পড়েন স্থানীয় তৃণমূল নেতা মন্মথ পাল। ঝাঁপিয়ে পড়েন উত্তমের ঘুমন্ত স্ত্রীয়ের উপর। নিজেকে বাঁচাতে চিৎকার করে উঠে ধাক্কা মেরে তৃণমূল নেতাকে মেঝেয় ফেলে দেন উত্তমের স্ত্রী। চিৎকার শুনে চলে আসে উত্তমের দুই মেয়েও। জানাজানি হওয়ার ভয়ে উত্তমের বাড়ি থেকে পালিয়ে যান অভিযুক্ত মন্মথ।
ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। উত্তম সুবিচারের আশায় লাভপুর থানার দ্বারস্থ হন। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, পুলিশ মন্মথের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে প্রথমে গড়িমসি করে। তার পর অভিযোগ নিলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এ দিকে তখনও বহাল তবিয়তে গ্রামেই ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা মন্মথ। পরে অবশ্য পরিবার নিয়ে উধাও হয়ে যান তিনি। উত্তম বলেন, ‘‘এফআইআর করেছিলাম। কিন্তু এফআইআরে কাজ হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করবে কি না, তা নিয়ে কোনও আশ্বাসও দেয়নি। আসামী দিব্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আমরা ভয়ে আছি।’’ গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা আগেও এমন কাণ্ড করেছেন। কিন্তু প্রভাবের কারণে তাঁর টিকিও ছুতে পারেনি প্রশাসন। এ বারও প্রভাব খাটিয়েই তিনি গ্রেফতারি এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে দাবি তাঁদের। আরও অভিযোগ, অভিযুক্ত নেতার ছেলের বিরুদ্ধেও একই ধরনের দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।
এ দিন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা মন্মথের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়িতে কেউ নেই। গ্রামবাসীদের দাবি, ঘটনার পর থেকে তাঁদের আর গ্রামে দেখা যাচ্ছে না। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তির দাবি করছেন গ্রামবাসীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজও চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুরজিৎ কুমার বলেন, ‘‘আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। মামলা রুজু হয়েছে। বাকিটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।’’