প্রস্তুতি: বিষ্ণুপুরের রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে স্যানিটাইজ়েশন। নিজস্ব চিত্র।
পুরনো ভাড়ায় পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। বুধবার ‘বাঁকুড়া জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সভায় এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সংগঠনের সম্পাদক জাফর আলম আনসারি। তিনি বলেন, ‘‘পুরনো ভাড়ায় কোনও বাসমালিক পথে বাস নামাতে রাজি নন। গত লকডাউনের সময় থেকে লিটার প্রতি ডিজ়েলের দাম প্রায় তিরিশ টাকা বেড়েছে। কিন্তু ভাড়া একই আছে। এত ক্ষতি সয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। সরকার যদি ভর্তুকি দেয়, তবেই পথে বাস নামবে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চোধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাসমালিকদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। সরকারি বাসের সংখ্যা বৃদ্ধির অনুরোধ করা হচ্ছে।’’
এ দিকে, বেসরকারি বাস পথে না নামলে দুর্ভোগের আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা। দুর্গাপুর-সোনামুখী রুটের এক নিত্যযাত্রী দীনেশ দাস বলেন, ‘‘বেসরকারি বাসই সংখ্যায় বেশি। সেগুলো না চললে সরকারি বাসে ভিড় বেশি হবেই।’’ তা ছাড়া, দুর্গাপুর-সোনামুখী ভায়া পখন্না, দুর্গাপুর-গঙ্গাজলঘাটি ভায়া রামহরিপুরের মতো একাধিক রুট রয়েছে জেলায়, যেখানে কেবল বেসরকারি বাসই চলে। বিষয়টি উল্লেখ করে দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে ঠিকাশ্রমিকের কাজ করা সোনামুখীর বাসিন্দা অমিত বাউরি জানান, বেসরকারি বাস পথে না নামলে কাজে যাওয়া বন্ধই থাকবে। এক সরকারি বাসকর্মীর যদিও দাবি, ‘‘যদি পঞ্চাশ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাসস্ট্যান্ড থেকেই বাস যাত্রা শুরু করে, তা হলে মাঝে কোনও স্টপে দাঁড়াতে পারবে না। তখন যাত্রীরা ঝামেলা করলে সামলানো মুশকিল হতে পারে!’’
এ দিকে, রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা মেনে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে পুরুলিয়া জেলার পথে নামছে বাস। তবে ঠিক কতগুলি রুটে কত বাস চলবে, তা স্পষ্ট করেনি ‘পুরুলিয়া জেলা বাসমালিক সমিতি’। বাস চালানো নিয়ে এ দিন বিকেলে বৈঠকে বসে সংগঠনটি। সংগঠনের জেলা সম্পাদক প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘সরকারের নির্দেশিকা মেনে ও সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে আমরা সংগঠনের সদস্যদের সমস্ত রুটেই বাস নামাতে বলেছি। কোন রুটে, কত যাত্রী হচ্ছে, তা দেখে বাস চালানো হবে। কোনও রুটে যত বাস রয়েছে, তার কতগুলি চালালে খরচে পোষাবে, সেটাও তো মাথায় রাখতে হবে। কারণ, জ্বালানির দাম অনেকটাই বেড়েছে।’’ ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন জানানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুরুলিয়া শহর, মানবাজার, বরাবাজার, বাঘমুণ্ডি, ঝালদা থেকে কলকাতাগামী বেশ কয়েকটি ‘নাইট সার্ভিস’-এর বাস চলে। প্রতিভারঞ্জনবাবু এ দিন জানান, ‘নাইট সার্ভিস’-এর বাসগুলি চালানোর দাবি রয়েছে বিভিন্ন স্তর থেকে। জেলা থেকে এমন ১৩টি বাস রাতে ছেড়ে পরদিন সকালে কলকাতায় পৌঁছয়। পরে সে দিন রাতেই বাস কলকাতা ছেড়ে পরদিন সকালে পুরুলিয়া ফেরে। তবে কোভিড বিধির কারণে যেহেতু রাত ৯টা থেকে পর দিন ভোর ৫টা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সে ক্ষেত্রে এই বাসগুলি চালানো যাবে কি না, তা পরিবহণ দফতরের কাছে জানতে চেয়েছেন তাঁরা। আরটিও সুভাষকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘নাইট সার্ভিস বাস পরিষেবা নিয়ে রাজ্যের তরফে কোনও নির্দেশ আসেনি।’’