পারিবারিক পুজো। নিজস্ব চিত্র
এ এক অন্য সরস্বতী পুজো। সরস্বতী পুজোয় লক্ষ্মী, ভগবতী, জয়া-বিজয়ারা পূজিত হন ইলামবাজারের সুগড় গ্রামের ঘোষ পরিবারে। প্রাচীন পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম এই পুজো। পুজোর সূচনা করেছিলেন ঘোষ পরিবারের সদস্য স্বর্গীয় রহিনীকান্ত ঘোষ। সেই সময় মাটির চালা ঘরে পুজো হত। এখন দেবীর পাকা মন্দির তৈরি হয়েছে। বংশ পরম্পরায় এই পুজো চলে আসছে।
পরিবারের রীতি অনুসারে সরস্বতী, লক্ষ্মী, ভগবতী একসঙ্গে পূজিত হন। সরস্বতী লক্ষ্মী ভগবতীর সঙ্গে থাকেন জয়া, বিজয়া এবং দুই স্বর্গের পরী রাগ ও রাগিনী। এই পুজোকে অনেকে বাগবাদিনী ঠাকুরানীর পুজোও বলে থাকেন। কেউ আবার বলে থাকেন সাত পুতুলের পুজো। শারদ উৎসবের পাশাপাশি সরস্বতী পুজোয় গ্রামে ধুমধাম হয়। পরিবারের সদস্যরা নিজের হাতে করে বিদ্যাদেবীকে সোনা ও রুপোর অলঙ্কারে সাজিয়ে তোলেন। সব জায়গায় এক দিনে বিদ্যাদেবীর পুজো হলেও ঘোষ বাড়িতে চার দিন ধরে চলে বাগদেবীর আরাধনা। মাকে বৈষ্ণব মতে পুজো করা হয়।
সুগড় গ্রামের ঘোষ বাড়িতে সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে আগে কবিগান, বাউলের আসর বসত। এখন দু’দিন ধরে যাত্রাগান হয়। প্রতি বছরের মতো এ বছরও মহোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পুজোর দিন পাঁচ রকমের নৈবেদ্য, পাঁচ রকমের ফল মিষ্টি, আতপ দিয়ে ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। পুজো দেখতে বিভিন্ন গ্রাম ও বোলপুরের মানুষজন ভিড় জমান। পুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল, ঢাকের পরিবর্তে ঢোল সানাই বাজানোর রেওয়াজ রয়েছে। প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় জিলিপি খাইয়ে মিষ্টিমুখ করানো হয়। পরিবারের অন্যতম সদস্য উৎপল ঘোষ বলেন, ‘‘পূর্বপুরুষেরা এই পুজো শুরু করেছিলেন। সেই থেকে এই পুজো চলে আসছে। যত দিন পারব, এই পুজো আমরা চালিয়ে যাব।’’