বাঁধাকপির দাম পাচ্ছেন না বাজারে। বিক্রিবাটা করে যা মিলছে, তাতে চাষের খরচই ওঠেনি। অভিযোগ কৃষকের। —নিজস্ব চিত্র।
ঘাম ঝরানো ফসল ফলিয়ে ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন না। এই অভিমানে নিজের জমিতে ট্র্যাক্টর চালিয়ে সমস্ত বাঁধাকপি পিষে দিলেন এক কৃষক। পুরুলিয়া ঝালদার ঘটনা। কৃষকের দাবি, বাধ্য হয়েই এই কাজ করেছেন।
ঝালদার হেঁসলা গ্রামের বাসিন্দা দেবেন কুইরি। তিনি কৃষিজীবী। তাঁর গ্রামের সিংহভাগ মানুষই চাষবাস করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু এই মরসুমে গ্রামের প্রত্যেক কৃষকই দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বাঁধাকপির দাম পাচ্ছেন না বাজারে। বিক্রিবাটা করে যা মিলছে, তাতে চাষের খরচই ওঠেনি। এই অবস্থায় অভিমানে ট্রাক্টর দিয়ে জমির সমস্ত বাঁধাকপি নষ্ট করে দিয়েছেন দেবেন।
অভিযোগের সুরে দেবেন জানান, শীতকালীন সব্জির একটুও দাম পাচ্ছেন না তাঁরা। বাজার মন্দা। তাই রাগে, দুঃখে এবং অভিমানেই ঘাম ঝরানো ফসল নষ্ট করে দিয়েছেন তিনি। কেন এমন করলেন? প্রশ্ন করতে দেবেনের জবাব, ‘‘কী করব বলুন? এই চাষ করার জন্য গড়ে একটি বাঁধা কপি পিছু ৩ থেকে ৪ টাকা খরচ হয় (একটি বাঁধাকপি এক কিলোগ্রাম ওজনের বেশিই হয়)। কিন্তু বিক্রি করার সময় একটি বাঁধাকপি প্রতি ৩ টাকা দামও মিলছে না। তাই বাধ্য হয়েই এই কাজ করেছি।’’
ওই গ্রামের মণীন্দ্রনাথ কুইরি, ধনঞ্জয় কুইরি, সনৎকুমার কুইরিরা বলেন, ‘‘শুধু বাঁধাকপি নয়, ফুলকপি, লাউ, সিম, বেগুন, টম্যাটো ছাড়া শীতকালীন সব্জির কোনওটারই সঠিক দাম পাচ্ছি না। ঋণ নিয়ে চাষ করেছি। এই অবস্থায় কী ভাবে ঋণ শোধ করব, কী ভাবে সংসার চালাব, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করাব— কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।’’ মণীন্দ্র, ধনঞ্জয়েরা সরকারি সাহায্যের প্রত্যাশা করছেন।
এই ফসল নষ্টের বিষয়টি নিয়ে ঝালদা-১ ব্লকের বিডিও রাজকুমার বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এ নিয়ে অবগত নই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’