প্রভাকরণের এই ছবি এক সময় ভাইরাল হয়েছিল। পরে জানা যায় ছবিটি জাল। ছবি: সংগৃহীত।
গত দেড় দশক ধরেই বিশ্বের কাছে তিনি মৃত। কিন্তু শ্রীলঙ্কার তামিল জঙ্গিগোষ্ঠী এলটিটিইর প্রতিষ্ঠাতা ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ এখনও জীবিত রয়েছেন বলে দাবি তামিলনাড়ুর সংগঠন ‘তামিল ন্যাশনাল মুভমেন্ট’-এর নেতা পি নেদুমারানের। সোমবার শ্রীলঙ্কায় পৃথক তামিল রাষ্ট্র (ইলম) গড়ার সমর্থনে তাঞ্জাভুরে আয়োজিত এক সভায় তিনি বলেন, ‘‘ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ এখনও বেঁচে রয়েছেন। শীঘ্রই তিনি প্রকাশ্যে আসবেন।’’
শ্রীলঙ্কা সরকারের দাবি, ২০০৯ সালের ১৮ মে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মুল্লাইতিভু এলাকায় চূড়ান্ত পর্যায়ের যুদ্ধে প্রভাকরণ-সহ এলটিটিইর প্রথম সারির সমস্ত নেতার মৃত্যু হয়েছিল। প্রভাকরণের দেহও উদ্ধার করা হয়েছিল মুল্লাইতিভুর অদূরে তামিল জঙ্গিদের শেষ ঘাঁটি মুল্লিভাইক্কালের লেগুন থেকে। বস্তুত, ওই বছরের গোড়া থেকে শুরু হওয়া লঙ্কা ফৌজের অভিযানে ৪০ হাজারেরও বেশি সাধারণ তামিল নাগরিক নিহত হয়েছিলেন। প্রভাকরণের স্ত্রী, কন্যা এবং দুই পুত্রেরও ওই যুদ্ধে মৃত্যু হয়।
এলটিটিই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণ। ছবি: সংগৃহীত।
পরে ব্রিটেনের একটি টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত ভিডিয়ো ফুটেজ এবং ছবি থেকে জানা যায়, এলটিটিই প্রধানের নাবালক পুত্র বালাচন্দ্রনকে জীবিত অবস্থায় বন্দি করার পরে গুলি করে খুন করেছিল প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের সেনা। শ্রীলঙ্কা-সহ বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতাপন্থী তামিল সংগঠনগুলির একাংশ অবশ্য গোড়া থেকেই দাবি তুলেছিল প্রভাকরণ জীবিত। এলটিটিই বিমানবাহিনী স্কাই টাইগার্সের একাধিক জিলিন জেড-১৪৩ বিমানের একটিতে চড়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নাকি পাড়ি দিয়েছেন রাজীব গান্ধী হত্যা মামলার মূল ষড়যন্ত্রী ।
এর পরে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে দেখা যায়, টিভির সামনে বসে নিজের মৃত্যুসংবাদ দেখছেন ‘থাম্বি’ (এলটিটিইর অন্দরে এই নামেই পরিচিত ছিলেন প্রভাকরণ)। কিন্তু পরে জানা যায় সেই ছবিটি জাল। যদিও এমডিএমকে নেতা রাজ্যসভা সাংসদ ভাইকো সে সময় দাবি করেছিলেন প্রভাকরণ বেঁচে রয়েছেন। তাঞ্জাভুরে শ্রীলঙ্কার গৃহযুদ্ধে নিহত তামিলদের স্মৃতিসৌধ ‘মুল্লিভাইক্কাল মেমেরিয়ালের’ সামনে দাঁড়িয়ে এ বার একই দাবি করলেন, ইলমপন্থী তামিলদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘ওয়ার্ল্ড তামিল কনফেডারেশন’-এর আহ্বায়ক তথা একদা ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেস নেতা নেদুমারান।