বোলপুরে মণীশ কোঠারির বাড়িতে চলছে সিবিআইয়ের অভিযান। প্রহরায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। ফাইল চিত্র
জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হিসেবরক্ষক মণীশ কোঠারিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) গ্রেফতার করতেই শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ফের সরব হল বিরোধীরা। মঙ্গলবার রাতে এই খবর জানাজানি হতে জেলা তৃণমূলের অন্দরেও গুঞ্জন ঘোরাফেরা করছে, এরপর কি আরও কাউকে গ্রেফতার হতে হবে।
মণীশের গ্রেফতারির খবরে দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহার তোপ, ‘‘তৃণমূল দলটা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে যুক্ত। অনুব্রতর হিসেবরক্ষক গ্রেফতার হয়েছেন। এ বার মাথারাও ধরা পড়বে।’’ একই সুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘এ ভাবেই এগিয়ে যাক। কোম্পানির মালিক ধরা পড়ুক। আমরা এটাই চাই।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে কেউ গ্রেফতার হতেই পারেন।’’
অনুব্রত মণ্ডলের যাবতীয় হিসেবনিকেশ সামলানোর দায়িত্বে ছিলেন মণীশ। গরু পাচার মামলার তদন্তে নেমে তাই যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা নামে বেনামে নানা সম্পত্তির হদিস পান তখন থেকেই তাঁদের নজর ছিল মণীশের উপরে। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি করা হয়, যেহেতু অনুব্রতর ব্যক্তিগত হিসেবরক্ষক হিসেবে মণীশ কাজ করতেন, তাই আর্থিক লেনদেনের সমস্ত তথ্যই তিনি জানতেন।
এর আগেও একাধিকবার তদন্তকারী সংস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছিল মণীশকে। বোলপুরে এবং দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। বোলপুর চৌরাস্তায় তাঁর বাড়িতেও অভিযান চালিয়েছিলেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। তবে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি। অনুব্রতকে ইডি দিল্লি নিয়ে যেতেই ফের তাঁকে তলব করা হয়। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, অনুব্রতর সামনে বসিয়ে তাঁকে জেরা করতেই মণীশকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছিল। মঙ্গলবার টানা জেরার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করার কথা জানানো হয়।
অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পরেই ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল, মণীশ ও অনুব্রতর কন্যা সুকন্যা-সহ ১২ জনকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা আছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। সেই মতো মঙ্গলবার মণীশকে তলব করা হয় দিল্লিতে। দিল্লি যাওয়ার আগে মণীশ জানিয়েছিলেন, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন। মঙ্গলবার রাতে তাঁর গ্রেফতারের খবর আসতেই জেলায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়েছে আরও কাউকে গ্রেফতার করা হবে কি না তা নিয়ে। তবে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউই মুখ খুলতে চাননি।