নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনার জন্য আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। সরকারই দেবে বাড়ি তৈরির টাকা। তবে তার জন্য অনেক তথ্য জমা করতে হবে প্রশাসনের কাছে। সরকারি আধিকারিক পরিচয়ে উপভোক্তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের আঙুলের ছাপ, ব্যাঙ্ক, ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডের তথ্য হাতিয়ে চলত প্রতারণা-চক্র! এই ধরনের বেশ কয়েকটি অভিযোগ দায়ের হতেই যৌথ অভিযান চালিয়ে অতনু কুণ্ডু নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ও ইন্দপুর থানার পুলিশ। ইন্দপুর থানার পায়রাচালি এলাকা থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ধৃতকে খাতড়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হলে ধৃতের চার দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অতনু প্রথমে সরকারি ওয়েবসাইট খুলে আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নামের তালিকা সংগ্রহ করতেন। সেই তালিকা থেকে এমন কিছু লোককে বেছে নিতেন তিনি, যাঁরা অনেক দূরে থাকেন। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, গত ১৫ অক্টোবর অতনু আবাস যোজনার প্রাপকের তালিকায় নাম থাকা হিড়বাঁধ ব্লকের বাসিন্দা আলপনা কোনারের বাড়িতে যান। সেখানে গিয়ে নিজেকে স্থানীয় বিডিও অফিসের কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে আলপনার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেন। তাঁর ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং আঙুলের ছাপ সবই সংগ্রহ করে নিয়ে যান। তার কিছু পরে আলপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে দশ হাজার টাকা উধাও হয়ে যায়। প্রতারকের ফাঁদে পড়েছেন বুঝতে পেরে থানায় হাজির হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আলপনা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে অতনুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে প্রতারণার কথা স্বীকারও করেছেন ধৃত।
একই পদ্ধতিতে প্রতারণার খবর পুলিশের কাছে আসে বাঁকুড়ার জেঠিয়া গ্রাম ও ছাতনার সেওন্ডা গ্রাম থেকে। এ ব্যাপারে বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) গণেশ বিশ্বাস বলেন, “ধৃতকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও বিশদে তথ্য পাওয়া যাবে। হিড়বাঁধের প্রতারণার ঘটনায় ধৃত প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিল। কিন্তু বাকি দু’টি প্রতারণার ঘটনায় তাঁর কী ভূমিকা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনায় আর কেউ যুক্ত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”