লকডাউনে শুনশান হিমাচল প্রদেশ।—ছবি পিটিআই।
হিমাচলপ্রদেশ বেড়াতে গিয়ে লকডাউনে ২২ দিন ধরে আটকে আছে বীরভূমের তিনটি পরিবার। এর মধ্যে দু’টি পরিবার মল্লারপুর থানার প্রচন্দ্রপুর ও কুমুড্ডা গ্রামের। অন্যটি সদাইপুর থানার থোব গ্রামের। তাঁদের কাছে টাকা ফুরিয়ে আসছে। এই অবস্থায় কবে কী ভাবে বাড়ি ফিরবেন, তা নিয়ে চরম উৎকণ্ঠায় ওই তিন পরিবার এবং তাঁদের আত্মীয়পরিজনেরা।
ওই তিনটি পরিবার পারস্পরিক আত্মীয়তার সূত্রে গত ৬ মার্চ এক সঙ্গে হাওড়া থেকে জম্মু-তাওয়াই এক্সপ্রেস ধরে হিমাচলপ্রদেশ ভ্রমণে যায়। ২২ মার্চ পাঠানকোট থেকে হিমগিরি এক্সপ্রেস ধরে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু হিমাচলপ্রদেশের পালমপুরে থাকাকালীন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রথমে জনতা কার্ফু এবং পরবর্তীতে দেশজুড়ে লকডাউনে তাঁরা আটকে পড়েন। প্রচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় চাষি বিপদতারণ মণ্ডল ফোনে বলেন, ‘‘পালমপুরে থাকার সময় জানতে পারি দেশজুড়ে লকডাউন হচ্ছে। ওখানে প্রতিদিন ৮০০ টাকা করে লজভাড়া দিতে হচ্ছিল। এই অবস্থায় পালমপুরে কর্মরত আমাদের গ্রামের বাসিন্দা এক সেনাকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি আমাদের সেনাবাহিনীর গেস্ট হাউসের সন্ধান দেন। বর্তমানে সেখানেই প্রতিদিন ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে নিজেরা রান্না করে খাওয়াদাওয়া করে থাকছি।’’
আটকে পড়া আর একটি পরিবারের সদস্য, থোপ গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ গড়াই জানান, এখানে প্রতিদিন চারশো টাকা করে খাওয়া খরচ লাগছে। এই মুহূর্তে তাঁদের কাছে আর খুব সামান্য পয়সা আছে। তাঁর কথায়, ‘‘৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে। কী ভাবে বাকি দিনগুলো কাটাব ভেবে পাচ্ছি না।’’ তৃতীয় পরিবারের মহিলা সদস্য তনুশ্রী মণ্ডল বলছিলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সাড়ে চার বছরের শিশুসন্তান আছে। এক জন বয়স্ক মহিলাও আছেন। মোট ৯ জন এই ভাবে পালমপুরে আটকে আছি। বাড়ি ফেরার জন্য ছটফট করছি সবাই।’’
কাদের সহযোগিতায় বাড়ি ফিরবেন তা জানেন না ওই তিন পরিবারের কেউই। করোনামোকাবিলায় রাজ্য সরকারের হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করেও সঠিক দিশা মেলেনি বলে তাঁদের অভিযোগ। একই ভাবে হিমাচল সরকারের হেল্পলাইন নম্বরেও আটকে থাকা পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছেন। সেখান থেকেও সদর্থক পদক্ষেপ করা হয়নি। উদ্বেগ এবং উৎকণ্ঠাকে সঙ্গী করে এক একটা দিন কাটাচ্ছেন ওই তিন পরিবারের সদস্যেরা।