মহারাষ্ট্রে আত্মসমর্পণ দুই মাওবাদী নেতার। ছবি: পিটিআই।
মাথার দাম ছিল আট লক্ষ টাকা! এ বার মহারাষ্ট্রের গঢ়ছিরৌলিতে নিরাপত্তাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করলেন দুই মাওবাদী নেতা। শনিবার এ কথা জানিয়েছে মহারাষ্ট্র পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আত্মসমর্পণ করা ওই দুই নেতার নাম রামাসু পয়াম ওরফে নরসিংহ এবং রমেশ কুঞ্জম ওরফে গোবিন্দ। শুক্রবার তাঁরা গঢ়ছিরৌলি পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় আধাসেনা বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। ৫৫ বছর বয়সি নরসিংহ গঢ়ছিরৌলির বাসিন্দা। তাঁর মাথার দাম নির্ধারিত হয়েছিল ৬ লক্ষ টাকা। ১৯৯২ সালে টিপাগড় স্লোকাল অর্গানাইজ়েশনাল স্কোয়াড (এলওএস)-এর সদস্য হন নরসিংহ। ২০১০ সালে কুতুল এবং নেলনারের এরিয়া কমিটির দায়িত্ব পান। সেই থেকে তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজেছে পুলিশ। কিন্তু খোঁজ মেলেনি নরসিংহের। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর নামে পাঁচটি খুন, একাধিক ডাকাতি এবং এনকাউন্টার-সহ মোট ১২টি মামলা রয়েছে।
অন্য দিকে, বছর পঁচিশের গোবিন্দ নারায়ণপুরের বাসিন্দা। ২০১৯ সালে মাওবাদীদের দলে যোগ দেন। ২০২০ সালে চেতনা নাট্য মঞ্চের সদস্য হন। শেষে ২০২১ সালে কুতুল এলওএস-এর সদস্যপদ পান গোবিন্দ। তাঁরও মাথার দাম ছিল ২ লক্ষ টাকা। সম্প্রতি নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) দলের একের পর এক সহকর্মী গ্রেফতার হওয়ার পর পরিবারের চাপে শুক্রবার আত্মসমর্পণ করেছেন ওই দুই নেতা। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, কেন্দ্র এবং মহারাষ্ট্র সরকারের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সাড়ে পুনর্বাসনের জন্য চার লক্ষ টাকা করে অনুদান পাবেন দু’জনেই।
প্রসঙ্গত, গত কয়েক বছর ধরেই দেশ থেকে মাওবাদীদের হটাতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। চলতি বছরেও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ একাধিক বার দাবি করেছেন, ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ এ দেশে মাওবাদীদের অন্তিম দিন হতে চলেছে। তার আগেই মাওবাদীদের সম্পূর্ণ নির্মূল করা হবে। মাওবাদীদের আত্মসমর্পণ করতেও উৎসাহ দিয়েছে রাষ্ট্র। ধরা দেওয়া মাওবাদীদের চাকরির সংস্থান, স্বাস্থ্য-সহ যাবতীয় দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে, এমন প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, নয়া নীতিতে মাওবাদীদের নির্মূলের পথে ইতিমধ্যে অনেকটাই এগিয়েছে সরকার। এখনও পর্যন্ত ৬৮০ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। তার মধ্যে চলতি বছরে আত্মসমর্পণ করেছেন ২০ জন।