ক্রমেই ছোট হচ্ছে শান্তিনিকেতনের খোয়াই। —নিজস্ব চিত্র।
লালমাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছে সার সার সবুজ গাছ। যত দূর চোখ যায়, শুধুই সবুজ। ক্রমেই ছোট হচ্ছে শান্তিনিকেতনের সেই খোয়াই। অভিযোগ, রিসর্ট তৈরি জন্য গাছ কাটা, যথেচ্ছ প্লাস্টিকের ব্যবহারের কারণে জন্মাচ্ছে না নতুন গাছ। এ বার এই নিয়েই কড়া পদক্ষেপ করল বন দফতর এবং বোলপুর ভূমি অধিকারী দফতর।
বন দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েক মাস ধরে তাদের কাছে খোয়াই নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বনবিভাগ এবং বোলপুর ভূমি অধিকারী দফতর যৌথ ভাবে খোয়াই এবং সোনাঝুরি বনাঞ্চলের বিস্তৃত এলাকাগুলি চিহ্নিত করেছে। খোয়াই-সোনাঝুরি বোলপুরের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পরিবেশবিদদের অভিযোগ, খোয়াইয়ে নিত্য দিন বেআইনি ভাবে গাছ কাটা হচ্ছে, প্লাস্টিক ব্যবহার করে ফেলা হচ্ছে এবং বিনা অনুমতিতে কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে বনে ঢুকছে গাড়ি। এ সব কারণে নতুন গাছ জন্মাতে পারছে না। ফলে খোয়াই অঞ্চলের ভূমিক্ষয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরও অভিযোগ, বন বিভাগের কিছু অংশ দখল করে বেআইনি ভাবে গড়ে উঠেছে রিসর্ট।
সোমবার ভূমি এবং বন বিভাগের আধিকারিকেরা খোয়াই পরিদর্শন করেন। তারা একটি রিসর্টের কর্মীদের জঙ্গলে প্লাস্টিক ফেলতে দেখেন এবং হাতেনাতে ধরে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের আবর্জনা পরিষ্কার করতে বলা হয়। বন বিভাগের পক্ষ থেকে একটি দল গঠন করা হয়েছে, যারা সোনাঝুরি সংলগ্ন এলাকাগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করবে। বেআইনি ভাবে গড়ে ওঠা রিসর্টগুলিকে আগেই নোটিস দেওয়া হয়েছিল। সূত্রের খবর, আগামী সাত দিনের মধ্যে আবার নোটিস পাঠানো হবে। বন দফতরের আধিকারিক সোমনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘বন বিভাগের জমি যদি দখল হয়ে থাকে, তবে তা অবশ্যই পুনরুদ্ধার করা হবে। অবৈধ ভাবে গাছ কাটা এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সব কাজের জন্য সোনাঝুরির পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্ল্যানিং অফিসার (এপিও)-কে একটি চিঠি দেওয়া হবে, যাতে তাঁরা বেড়া বা কাঁটাতার দিয়ে বনভূমি ঘিরে ফেলার ব্যবস্থা নিয়ে পর্যালোচনা করেন।