কাঞ্চনপুর হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ। নিজস্ব চিত্র
একের পর এক চিকিৎসক এবং নার্স করোনা আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। এমন অবস্থায় সাময়িক ভাবে হাসপাতালে ভর্তি বন্ধের নোটিস ঝোলাল বাঁকুড়া জেলার কাঞ্চনপুর ব্লক হাসপাতাল। হঠাৎ করে হাসপাতালে ভর্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন এলাকার মানুষ।
হাসপাতালের একের পর এক চিকিৎসক এবং নার্স করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিভৃতবাসে। বাকি যে কয়েক জন চিকিৎসক এবং নার্স রয়েছেন তাঁরা ব্যস্ত টিকাকরণ ও লালারসের নমুনা পরীক্ষার কাজে। এই অবস্থায় কর্মী সঙ্কটের কারণে এ বার রোগী ভর্তি নেওয়া বন্ধ করে দিল বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের কাঞ্চনপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বুধবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নোটিস দিয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, সাময়িক ভাবে ওই পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। তবে তা দ্রুত চালু করার চেষ্টা করা হবে বলেও জানানো হয়েছে নোটিসে।
হাসপাতালে মোট ৯ জন নার্স। চিকিৎসক রয়েছেন হাতে গোনা। গত কয়েক দিন ধরেই হাসপাতালের চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছিল। আক্রান্তদের নিভৃতবাসে পাঠিয়েও কোনও ভাবে হাসপাতালের সব ক’টি বিভাগ চালু রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি একসঙ্গে দুই চিকিৎসক, পাঁচ জন নার্স এবং তিন জন অফিস কর্মী আক্রান্ত হয়ে পড়ায় চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হতে শুরু করে।
কাঞ্চনপুর ব্লক হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবজ্যোতি গোস্বামী বলেন, ‘‘এই হাসপাতালের অন্তর্বিভাগে মোট ৩০টি শয্যা রয়েছে। কর্মীর অভাবে বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার বিকাল থেকে সাময়িক ভাবে হাসপাতালে রোগী ভর্তি বন্ধ করা হয়েছে। যে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা চলছিল বুধবার সকাল থেকে তাঁদের অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রায় সুস্থ হয়ে রোগীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা ফের এই পরিষেবা চালু করতে পারব।’’
বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার মধ্যে এই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিই একমাত্র হাসপাতাল। এর উপর নির্ভর করে রয়েছেন অনেকেই। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভর্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন ওই ব্লকের সাধারণ মানুষ। বাঁকুড়া দু’নম্বর ব্লকের কেশিয়াকোল গ্রামের বাসিন্দা পার্থসারথি রায় বলেন, ‘‘করোনা ছাড়াও এই মরসুমে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এলাকার বহু মানুষ। এই ধরনের অসুস্থদের ভর্তি রেখে চিকিৎসার জন্য এলাকায় আর কোনও হাসপাতাল নেই। এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী বর্তি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন যে কোনও রোগীকে নিয়ে যেতে হবে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে।’’