অনুব্রত মণ্ডল। — ফাইল চিত্র।
অনুব্রত মণ্ডলের পাশাপাশি গরু পাচার মামলার তদন্তে তৃণমূলের জেলা সভাপতির ঘনিষ্ঠদের একাধিক যোগ সামনে এসেছে সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের হাতে। আর তা ধরেই দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতে চাইছেন তদন্তকারীরা। সেই তদন্তের সূত্রেই বুধবার সাত সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ চার জনের বাড়িতে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ চালাল সিবিআই। এই অভিযান ঘিরে দিনভর চর্চায় রইলেন ওই চার জন।
যাঁদের বাড়িতে এ দিন সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে, তাঁদেরই এক জন বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। বোলপুর পুরসভার ১৯ ওয়ার্ডের এই তৃণমূল কাউল্সিলর বেশি পরিচিত অবশ্য ‘মুন’ নামেই সকলে তাঁকে চেনেন। কে এই বিশ্বজ্যোতি, অনুব্রতের সঙ্গে তাঁর কী ও কতটা সম্পর্ক রয়েছে, তা এখন সিবিআইয়ের আতসকাচের নীচে বলে সূত্রের খবর।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, বোলপুর শুঁড়িপাড়ার বাসিন্দা বিশ্বজ্যোতির প্রথম জীবনে অভাবের সংসার ছিল। পরে তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি অনুব্রতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি এলাকার কয়েক জনের দাবি, সেই সুবাদে কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বজ্যোতির প্রভাব বাড়ে। এ বছর পুরসভা নির্বাচনে দল তাঁকে টিকিটও দেয়। তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।
সিবিআইয়ের এ দিনের নজরে থাকা আর এক জন হলেন শুঁড়িপাড়া এলাকারঅ বাসিন্দা এবং বিশ্বজ্যোতির অনুগামী তৃণমূল কর্মী সুদীপ রায়। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হলেও সম্প্রতি তাঁরও শ্রীবৃদ্ধি ঘটেছে। বেশ কয়েক মাস আগে মৎস্য দফতরের কর্মী পদে কাজেও যোগ দেন সুদীপ। অনুব্রতের বাড়ি ও দলীয় কার্যালয়ে সুদীপের প্রায়শই যাতায়াত রয়েছে। অনুব্রতের হিসাবরক্ষক তথা চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারিকেও এ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। তৃণমূলের জেলা সভাপতির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা অনেক দিনের। সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রতের সম্পত্তির হিসাব নিকাশ রাখেন এই মণীশ।
এ দিন সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে বোলপুর উকিলপট্টি এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী সুজিত দে-র (দোলন) বাড়িতেও। অনুব্রতের সঙ্গে তাঁরও দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে বলে তৃণমূল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সুজিতের একটি হার্ডওয়্যারের দোকান ও প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা রয়েছে বলে সূত্রের খবর। সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রতের নিজের নামে তো বটেই, তাঁর বহু ঘনিষ্ঠজনের নামেও বিপুল সম্পত্তির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ছাড়াও একাধিক বেনামে সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরে সুজিতের ব্যবসার সঙ্গে অনুব্রতের কোনও যোগ ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।