বাঁ দিকে ঘটনাস্থলে ফরেনসিক দল। ডান দিকে শেখ সলমনকে সঙ্গে নিয়ে চৌপাহাড়ির জঙ্গলে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এল বীরভূমের ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া খুনে। পুলিশের দাবি, কী ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া সৈয়দ সালাউদ্দিনকে খুন করা হয়েছিল তা জেরায় জানিয়েছেন ধৃত শেখ সলমন। তদন্তকারীদের দাবি, তিনি স্বীকার করেছেন, শনিবার রাতে চৌপাহাড়ির জঙ্গলে বসে মদ্যপান করেছিলেন সালাউদ্দিনের সঙ্গে। সালাউদ্দিন নেশার ঘোরে কিছুটা বেহুঁশ হয়ে পড়লে সলমন তাঁর গলায় ছুরি বসিয়ে দেন নির্দ্বিধায়। এমনটাই দাবি তদন্তকারীদের।
সোমবার সকালে সলমনকে নিয়ে চৌপাহাড়ির জঙ্গলে যান তদন্তকারীরা। তাঁকে আরও এক প্রস্ত জেরা করা হয় সেখানে। সলমন এবং সালাউদ্দিন কী ভাবে কোন রাস্তা ধরে জঙ্গলে পৌঁছেছিলেন, তা খতিয়ে দেখে পুলিশ। সেই সঙ্গে সেখানে তাঁরা কত ক্ষণ ছিলেন, জানতে চাওয়া হয় তা-ও। জঙ্গলের ঠিক কোথায় সালাউদ্দিনকে খুন করা হয়েছিল তা-ও দেখেন পুলিশকর্মীরা। সলমনের হাতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। খুনের পর নিজেকে ‘নিরপরাধ’ প্রমাণ করতে সলমন কি নিজের হাতে আঘাত করেছিলেন নিজেই— এই প্রশ্নের উত্তরও জানতে চান তদন্তকারীরা। এই হত্যাকাণ্ডে সলমনের আর কোনও সহযোগী ছিলেন কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে সেই বিষয়টিও। তদন্তকারীদের মতে, সালাউদ্দিন হত্যারহস্যের কিনারা করা গেলেও, শনিবার রাতের ঘটনার ছবিটা আরও স্পষ্ট হওয়া উচিত। তাই সালাউদ্দিনকে নিজেদের হেফাজতে চাইবে পুলিশ।
তদন্তকারীদের পাশাপাশি, সোমবার চৌপাহাড়ির জঙ্গলে যায় ফরেনসিক দলও। সেখান থেকে নানা নমুনাও সংগ্রহ করেন ওই দলের সদস্যরা। খতিয়ে দেখা হবে ওই সব নমুনা। পুলিশের দাবি, টাকার জন্য সালাউদ্দিনকে খুন করার ছক কষেছিলেন সলমন। এ জন্য তিনি আগেই কিনে রেখেছিলেন ছুরি। শনিবার রাতে সেই ছুরি দিয়েই বন্ধুকে খুন করেন সলমন। খুনে ব্যবহৃত সেই ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। পাশাপাশি, দু’জনে যে গ্লাসে মদ্যপান করেছিলেন উদ্ধার করা হয়েছে তা-ও।
রবিবার চৌপাহাড়ির জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয় সালাউদ্দিনের দেহ। তাঁর গলার নলি কাটা ছিল। তিনি পড়াশোনা করতেন আসানসোলের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। এর পরই সালাউদ্দিনের বন্ধু সলমনকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিস মনে করছে, টাকার জন্যই বন্ধুকে খুন করেছেন সলমন। জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে সৈয়দ সালাউদ্দিনের কাছে দু’ লক্ষ টাকা ধার চেয়েছিলেন সলমন।