বাগুইআটিতে জোড়া খুনের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিলেন সৌগত রায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাগুইআটির খুন হওয়া দুই কিশোরের এক জন মাদকাসক্ত ছিল। পুলিশ সূত্রেই এ কথা জানতে পেরেছেন তিনি। এমনই দাবি করলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তাঁর অভিযোগ, সর্বত্র মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখা যাচ্ছে। তারই ফলে এমন দুঃখজনক ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, ‘‘ওই ছেলেগুলো খারাপ হয়ে গিয়েছিল। এনটেন বলে একটা ড্রাগ আছে, সেটা ওরা খেত বলে জানতে পেরেছি।’’
আনন্দবাজার অনলাইনকে সৌগত বলেন, ‘‘বেঘোরে মারা গেল দুই কিশোর। এটা খুবই দুঃখের কথা। এই ছেলে দুটো সম্পর্কে পুলিশের রিপোর্ট পেলাম। এরা ড্রাগ-টাগ খেত ইত্যাদি ইত্যাদি।’’ পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘একটা ছেলে অতনু ড্রাগের নেশা করত বলে শুনেছি। আমি তো ব্যক্তিগত ভাবে এদের চিনি না। যেটা শুনলাম (সেটাই বলছি পুলিশের কাছ থেকে)।’’
প্রবীণ সাংসদ মনে করেন, সমাজে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। তাঁর কথায়, ‘‘কাগজ খুললে বিজ্ঞাপন— এটা পরুন, এটা কিনুন।’’ অভিযোগ করেন, ব্র্যান্ডেড জামাকাপড় পরার জন্য সবাইকে প্রলুব্ধ করতে দায়ী এক শ্রেণির সংবাদমাধ্যমও। তাই যে ‘লাইফস্টাইল’ মানুষের সাধ্যের বাইরে, সে দিকেও ঝুঁকছে মানুষ।
সৌগত জানান, এ সব নিয়ন্ত্রণ করা যায় স্কুলে মূল্যবোধ তৈরি করা গেলে। সরকারেরও মূল্যবোধ সংক্রান্ত শিক্ষা দেওয়া উচিত। তাঁর কথায়, ‘‘বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বা ক্যাথলিক স্কুলের পড়ুয়ারা তাই ‘বেটার’(তুলনামূলক ভাল)।’’
বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের ছাত্র ছিল বছর সতেরোর অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর। দু’জনেই দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। পুলিশ সূত্রে খবর ছিল, দুই স্কুল পড়ুয়া নিখোঁজ হয় গত ২২ অগস্ট। দু’দিন তাদের কোনও খোঁজ না পেয়ে বাগুইআটি থানায় অভিযোগ করে পরিবার। পুলিশের কাছে অতনুর বাবা অভিযোগ করেন, তিনি বেশ কয়েক বার উড়ো ফোন পেয়েছেন। মেসেজও পেয়েছেন। দাবি একটাই— মুক্তিপণ। মুক্তিপণের অঙ্ক বিশাল না হলেও ‘অপহরণকারীরা’ নির্দিষ্ট কোনও জায়গা বলেনি। বরং বার বার বদলেছে মুক্তিপণের অঙ্ক। এর পর গত ৬ সেপ্টেম্বর দুই কিশোরের দেহ উদ্ধার হয় বসিরহাট পুলিশ জেলার মর্গ থেকে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে একটি বাইক কেনার জন্য অতনু ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল সত্যেন্দ্র চৌধুরিকে। কিন্তু এই বয়সে এত টাকা তারা পায় কোথায়, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সৌগত।
(এই প্রতিবেদন প্রকাশের প্রথমে সাংসদ সৌগত রায়ের বয়ানে দু’টি ছেলে মাদকাসক্ত লেখা হয়েছিল। যা উনি বলেননি। সাংসদ জানান, তিনি পুলিশের কাছে শুনেছেন যে, এক জন ছেলে মাদক নিত। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।)