রাস্তার ধারেই অস্ত্রোপচারের তোড়জোড়। — নিজস্ব চিত্র।
মাতৃগর্ভে মৃত্যু হয়েছিল দুই শাবকের। মৃত সেই শাবকদের থেকেই মায়ের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছিল সংক্রমণ। বিষয়টি টের পেতেই তড়িঘড়ি নিজেদের চেষ্টায় রাস্তার ধারে অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার তৈরি করে মায়ের শরীর থেকে মৃত দুই শাবককে বার করে আনলেন দুই চিকিৎসক। তবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় কেটে বাদ দিতে হল মায়ের ইউটেরাস। বৃহস্পতিবার দুপুরে বাঁকুড়ার মাচানতলায় একটি পথকুকুরকে বাঁচাতে দুই পশু চিকিৎসক এবং এক সারমেয়প্রেমীর এমন উদ্যোগ দেখে হতবাক পথচারী থেকে স্থানীয় বাসিন্দা সকলেই।
গত কয়েক দিন ধরে বাঁকুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র মাচানতলায় একটি পথকুকুরকে প্রবল অস্বস্তি নিয়ে ঘোরাফেরা করতে দেখেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নজর এড়ায়নি পশু চিকিৎসক শুভাশিস তিওয়ারির। বুধবার প্রথম দেখাতেই তিনি বুঝতে পারেন মা কুকুরটির গর্ভে মৃত্যু হয়েছে এক বা একাধিক শাবকের। সেখান থেকেই মায়ের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। দ্রুত মৃত শাবককে মায়ের গর্ভ থেকে বার করে আনতে না পারলে অচিরেই তার বড় ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কাও তৈরি হয়। তার ফলে শুরু হয় অস্ত্রোপচারের আয়োজন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় সারমেয়প্রেমী মধুমিতা দাসকে। খবর যায় পশু চিকিৎসক তাপস বিশ্বাসের কাছেও। বৃহস্পতিবার বেলার দিকে মাচানতলা এলাকায় স্থানীয়দের কাছ থেকে চেয়ে আনা একটি টেবল নিয়ে রাস্তার ধারে তৈরি করা হয় অস্থায়ী অপারেশন থিয়েটার। সেখানেই মা কুকুরটির শরীরে অস্ত্রোপচার করে বার করে আনা দু’টি মৃত শাবককে। অস্ত্রোপচারের পর স্যালাইন এবং প্রয়োজনীয় ইঞ্জেকশন দিয়ে কুকুরটিকে বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা। পরে কুকুরটি ধীরে ধীরে চাঙ্গা হয়ে উঠলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মধুমিতা বলেন, ‘‘আমরা শুভাশিস তিওয়ারির কাছ থেকে খবর পেয়েই তড়িঘড়ি প্রাণীটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলাম। এলাকার মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা আমাদের অনেক সাহায্য করেছেন।’’ নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে কুকুরটি। সে জন্য এমন আয়োজন দেখে মুগ্ধ স্থানীয় বাসিন্দারাও।