কংগ্রেসে যোগ দিলেন দেড়শো তৃণমূল কর্মী।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে রয়েছেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনে ভাঙন। বীরভূমের মুরারই দু’নম্বর ব্লকের পাইকরে সদলবলে জোড়াফুল ছেড়ে হাত শিবিরে যোগ দিলেন অন্তত দেড়শো কর্মী-সমর্থক। মিত্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের এক তৃণমূল সদস্যের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগদান করলেন তাঁরা।
রবিবার পাইকরে কংগ্রেসের দলীয় কার্যালয়ে যোগদান কর্মসূচির আয়োজন করা হয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেখানে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য বাবুল আখতারের নেতৃত্বে কংগ্রেসে যোগ দিলেন এলাকার অন্তত দেড়শো কর্মী-সমর্থক। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কংগ্রেস নেতা আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েই মিত্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় দেড়শো কর্মী জাতীয় কংগ্রেসে যোগদান করলেন। আগামী দিনে তাঁরা কংগ্রেসের হয়েই কাজ করবেন এবং দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলবেন।’’
কংগ্রেসের সভাপতি মিলটন রশিদ বলেন, ‘‘তৃণমূলের দুর্নীতি এখন সবাই বুঝতে পারছেন। দলেও অন্তর্দ্বন্দ্ব। যাঁরা স্বচ্ছ ভাল মানুষ, তাঁরা তৃণমূলে থাকতে পারছেন না। সেই কারণেই কংগ্রেসের হাত ধরছেন অনেকে।’’
তৃণমূল সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে ‘অনুব্রতহীন’ বীরভূমে দলের সাংগঠনিক দায়িত্বভার কাকে দেওয়া হবে, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দলীয় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করতে শুক্রবার রামপুরহাটে কেষ্টর প্রসঙ্গ টানতে দেখা যায় দলের নেতাদের। বলা হয়, আগামী পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনে অনুব্রতের দেখানো পথই অনুসরণ করা হবে জেলায়। তাঁর নামে জয়ধ্বনিও ওঠে। বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, ‘‘কেষ্টদাকে সঙ্গে রেখেই সংগঠন চলছে। কেষ্টদাকে ছেড়ে কেউ চালাচ্ছে না। কেষ্টদাকে কেউ ভুলে যায়নি বা কেষ্টদাকে কেউ ছেড়েও যায়নি। কেষ্টদা যে রকম ভাবে ছিলেন, সে রকম ভাবেই আছেন। তিনি এই মূহূর্তে শারীরিক ভাবে সঙ্গে নেই, তবুও তাঁর মতামত নিয়েই দল চলছে।’’ ঠিক তার পরেই অনুব্রতের জেলার দলের রক্তক্ষরণ।
দলবদল প্রসঙ্গে তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কী কারণে ওঁরা দল ছাড়ার কথা ভেবেছেন, আমরা নিশ্চয়ই খতিয়ে দেখব। পাশাপাশি, তৃণমূল তাঁরাই করেন, যাঁরা মানুষের পাশে থাকতে চান।’’