গাড়ির স্পিডোমিটারে দেখা যাচ্ছে গতি ১০০ কিলোমিটার। ফেসবুক লাইভ করতে করতে গাড়ির সওয়ারিদের এক জনকে বলতে শোনা গেল, ‘আরও স্পিড বাড়া। ৩০০-য় নিয়ে চল। আজ চার জনই মরব!’ তার পরই অট্টহাসি।
গাড়ির স্পিডোমিটারের দিকে তখনও তাক করা মোবাইল ক্যামেরা। সেখানে গতির কাঁটা ক্রমে ১০০ ছাড়িয়ে ১৫০… ১৮০ ছুঁয়ে ফেলেছিল। কিন্তু সেই গতিতেও যেন মন ভরছিল না সওয়ারিদের। আরও, আরও জোর চালানোর জন্য সওয়ারিরা চালককে বলছিলেন।
গাড়ি তখন এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে প্রায় হাওয়ায় উড়ছিল। রাস্তার আশপাশ সেই গতিতে ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। গাড়ির গতি তখন প্রায় ২০০ ছুঁইছুঁই করছে। এক জনকে বলতে শোনা গেল, ‘‘এখান থেকেই স্পিড তোল…তোল স্পিড।’’ আবার এক জনকে পরামর্শ দিতে শোনা গেল, ‘‘সিটবেল্ট বেঁধে নাও।’’ গাড়ি যখন ২৩০ কিলোমিটার গতি ছুঁতেই ভিডিয়োটি শেষ হয়ে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িতে চার জন ছিলেন। ২৩০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে থাকা সেই গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাককে মুখোমুখি ধাক্কা মেরে পুরো দলা পাকিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়িতে থাকা চার জনের। ভয়ানক এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের সুলতানপুরে পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়েতে।
জেলাশাসক রবীশ কুমার এবং পুলিশ সুপার সোমেন বর্মা জানিয়েছেন, মৃতেরা হলেন আনন্দ প্রকাশ (৩৫), অখিলেশ সিংহ (৩৫), দীপক কুমার (৩৭) এবং ভোলা কুশওয়া। সকলেই উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, গাড়ি চালাচ্ছিলেন ভোলা কুশওয়া। ৩০০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানোর জন্য জোরাজুরি করেছিলেন দীপক। আর তার পরই একটি কণ্ঠ শোনা যায়, ‘‘আজ চার জনই মরব!’’ শুক্রবার বিকেল ৩টে ৫০মিনিটে ঘটনাটি ঘটে সুলতানপুরের হালিয়পুর থানার কাছে। বিহারের রোহতাস থেকে দিল্লির দিকে যাচ্ছিল গাড়িটি। লখনউ থেকে বিহারের দিকে যাওয়া ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগতেই একেবারে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায় ছোট গাড়িটি। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ধাক্কার অভিঘাত এতটাই বেশি ছিল যে, ছোট গাড়িটির সওয়ারিদের দেহ টুকরো হয়ে গিয়েছিল।