—নিজস্ব চিত্র।
গ্রামে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। তবে গ্রামে ঢোকার বা বেরোনোর নির্দিষ্ট রাস্তাই নেই। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি! পুরুলিয়ার শ্যামপুর গ্রামে হাজারেরও বেশি মানুষের বাস হলেও তা একপ্রকার ‘বিচ্ছিন্ন দ্বীপে’ পরিণত। নিত্যদিনের কাজকর্ম, বাজারহাট স্কুল-কলেজে যেতে অসুবিধায় পড়েন গ্রামবাসীরা। অ্যাম্বুল্যান্স বা দমকলের গাড়ি ঢুকতে হলেও জাতীয় সড়কের পাশে আইমুন্ডি মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকতে সেগুলিকে। মুমূর্ষু রোগীকেই নিয়ে যেতে হয় অ্যাম্বুল্যান্সের কাছে। এমনকি, অন্য গ্রামের লোকজন এখানে মেয়ের বিয়ে দিতেও ভরসা পান না বলে দাবি গ্রামবাসীদের।
পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের গাড়াফুসড়া অঞ্চলের শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দারা একটি জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতেন। তবে সম্প্রতি সেই জমির মালিক তাতে খাল কেটেছেন। ফলে সমস্যা পড়েছেন গ্রামবাসীরা। দীপক মাহাতো নামে গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘গ্রাম থেকে বার হয়ে প্রায় ১০০ ফুট মতো গেলেই গ্রামে ঢোকার বা বেরোনোর আর কোনও রাস্তা নেই। প্রতি দিনই অন্যদের রায়তি জমির ওপর দিয়ে যাতায়াত করি। গ্রামে রাস্তা নেই বলে অ্যাম্বুল্যান্স, অগ্নিনির্বাপণ গাড়িও আসতে চায় না।’’ এ গ্রামের ছেলেদের বিয়ে দিতে গেলেও সমস্যা পড়তে হয় বলে দাবি ভগীরথ মাহাতোর। ওই বাসিন্দা বলেন, ‘‘বর্ষাকালে আমাদের গ্রামে অ্যাম্বুল্যান্স আসতে চায় না। ফলে রোগী নিয়ে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। এমনকি গ্রামে রাস্তা না থাকায় অনেকে এখানে মেয়ের বিয়েও দিতে চান না।’’
এ নিয়ে ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরে লিখিত ভাবে সমস্যার কথাও জানিয়েছেন তাঁরা। গ্রামবাসীদের দাবি, ওই জমিটির কিছু অংশ সরকারের বাকিটার ব্যক্তিগত মালিকানাধীন। কিন্তু তাতে খাল কেটে দেওয়ার গ্রামে রেশনদ্রব্যের গাড়ি আসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রশাসনের আশ্বাস, ছ’মাসের মধ্যে গ্রামে রাস্তা হয়ে যাবে। পঞ্চায়েতের প্রধান কবিতা মাহাতর দাবি, ‘‘আমরা ওই গ্রামে ছ’মাসের মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দেব। কিন্তু গ্রামবাসীকে তো সঠিক রাস্তা বার করে দিতে হবে।’’ অন্য দিকে, পুরুলিয়া ১ নম্বর ব্লকের ভূমি ও ভূমিসংস্কার দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। উভয় পক্ষকে নোটিস পাঠানো হয়েছে।’’