দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্নায় রাজ্যের টেট প্রার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত।
যন্তর মন্তরে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’-র অভিযোগে ধর্নার জন্য আবেদন জানালেও তৃণমূলকে লিখিত অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। সেই জায়গাতেই ধর্নার জন্য অনুমতি পেল এ রাজ্যের প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার, গান্ধীজয়ন্তীতে যন্তর মন্তরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে দিল্লিতে ধর্নায় বসেছেন প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগের দাবি তুলেছেন। তাঁদের অবস্থানের অনুমতি দেওয়ার পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে উঠছে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ।
সোমবার দিল্লির থানায় গিয়ে যন্তর মন্তরে অবস্থানের জন্য লিখিত ভাবে অনুমতি চান দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২০০৯ সালের চাকরিপ্রার্থীরা। ৩০ মিনিটের জন্য যন্তর মন্তরে বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাঁদের। যন্তরমন্তরের পর রাজঘাটে যাবেন তাঁরা, যেখানে ধর্নায় বসেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। চাকরিপ্রার্থীরা জানিয়েছেন, সেখানে গিয়েও নিয়োগের দাবিতে অবস্থান করবেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন তাঁরা বঞ্চিত। এক চাকরিপ্রার্থী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘আমরা যখন অভিষেকের কাছে যাচ্ছি, বারবার গ্রেফতার করা হচ্ছে। তিনি এখানে এসেছেন বঞ্চনার কথা বলতে। আমাদের বঞ্চনার কথা তিনি শোনেন না। ওঁর বঞ্চনার কথা সরকার কেন শুনবে?’’ প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে লিখিত ভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। এ হেন চাকরিপ্রার্থীদের যন্তরমন্তরে ধর্নায় বসার অনুমতি দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে পুলিশ।
সোম এবং মঙ্গলবার দিল্লিতে ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র অভিযোগে প্রতিবাদ কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূলের। এই কর্মসূচিকে ঘিরে ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পুলিশ বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। ‘অতি সক্রিয়’ হয়েই তৃণমূলকে যন্তরমন্তরে দিল্লি পুলিশ ধর্নায় বসতে দেয়নি বলে দাবি তৃণমূলের। যদিও রাজ্যের প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
সোমবার সকাল থেকেই দিল্লিতে ঢুকতে শুরু করেছে তৃণমূলের একের পর এক বাস। বাসযাত্রীদের প্রত্যেককেই রাখা হচ্ছে সেখানকার অম্বেডকর ভবনে। দলীয় সূত্রে খবর, ওই ভবনে বিশ্রাম নিয়েই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন দলের কর্মী এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে ‘বঞ্চিত’ হয়েছেন বলে অভিযোগ তোলা মানুষেরা। এই পরিস্থিতিতে সোমবার সকালেই অম্বেডকর ভবনে যায় দিল্লি পুলিশের একটি দল। ক’টি বাস এসেছে, ক’টি বাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে, দিল্লিতে আসা কর্মী-সমর্থকদের দেখভালের দায়িত্বে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেয় পুলিশ।
পুলিশের এই ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তৃণমূলের অন্দরে। প্রসঙ্গত রাজধানী দিল্লির পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন। যে মন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলান শাহ। তাই এই ‘সক্রিয়তা’র নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন তৃণমূলের কেউ কেউ। তবে প্রকাশ্যে এই নিয়ে এখনই মুখ খুলতে চাইছেন না শাসকদলের কেউই। এর মধ্যেই যন্তরমন্তরে ধর্নার অনুমতি পেলেন প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীরা, যা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।