অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: টুইটার।
বাঁশি বাজিয়ে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। সাংবাদিক বৈঠক অসম্পূর্ণ রেখেই বেরিয়ে গেলেন অভিষেক।
বিজেপির ‘দুর্নীতি’র অভিযোগের জবাব দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন সিবিআই তদন্তে তাঁর আপত্তি নেই। কিন্তু বিজেপির দাবি মোতাবেক চারটি জেলায় দুর্নীতি হয়ে থাকলে বাকি ১৬টি জেলায় কেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হল, সেই প্রশ্ন তুললেন অভিষেক।
ধর্না শেষ করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের ১৫ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ করলেন অভিষেক।
রাজঘাটের সামনে থেকে তৃণমূলকর্মীদের সরিয়ে দিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশ। অন্য দিকে ধর্না অবস্থান বন্ধ করে বেরিয়ে যাচ্ছেন অভিষেক-সহ অন্য তৃণমূল নেতারাও।
রাজঘাটে ধর্না-কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত হলেও, তৃণমূলকে এই বিষয়ে লিখিত অনুমতি দেয়নি দিল্লি পুলিশ। তবে পুলিশ অনুমতি না দিলেও গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানেই শান্তিপূর্ণ উপায়ে ধর্নায় বসে পড়েন অভিষেকেরা। রাজঘাটের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
অভিষেকের সঙ্গে ধর্নায় বসেছেন দলের অন্য রাজ্যসভা এবং লোকসভার সাংসদেরাও। আছেন রাজ্যের বেশ কিছু মন্ত্রী এবং সংগঠনের পদাধিকারীরা। ধর্নায় দেখা যাচ্ছে সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, কাকলি ঘোষদস্তিদার, দলের যুব সভানেত্রী সায়নী ঘোষ প্রমুখকে। ধর্নায় হাজির প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে একাধিক পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড। অভিষেকের হাতের প্ল্যাকার্ডে কালোর উপরে সাদা কালিতে লেখা হয়েছে, “বাংলার টাকা এখনই ছাড়া হোক।”
কেন্দ্রীয় ‘বঞ্চনা’র বিরুদ্ধে রাজঘাটের সামনে ধর্নায় বসলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ অন্য তৃণমূল নেতারা। প্রত্যেকেরই পরনে রয়েছে সাদা পোশাক। হাতে সকলেই কালো রিবন পরেছেন। রাজ্যের ‘প্রাপ্য’ টাকার পরিসংখ্যান উল্লেখ করে এবং দ্রুত টাকা মঞ্জুর করার দাবি তুলে একাধিক পোস্টার তৈরি করে এনেছেন নেতারা। সেগুলি তুলে ধরছেন তাঁরা। তবে কোনও স্লোগান শোনা যায়নি ধর্না কর্মসূচিতে। বরং, অভিষেককে এক দলীয় কর্মীর উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, “এখানে রাজনৈতিক স্লোগান দিও না।” মনে করা হচ্ছে রাজঘাটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ দেখাবে বাংলার শাসকদল।
রাজঘাটে পৌঁছলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের আগেই সেখানে উপস্থিত হয়েছেন তৃণমূলের অন্য নেতারা। অন্য সাংসদদের সঙ্গে সেখানে বসে পড়েন অভিষেক। অভিষেক-সহ সব সাংসদ এবং নেতাদের হাতে ছিল কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা দ্রুত মঞ্জুর করার দাবি সংবলিত পোস্টার। অভিষেকের সঙ্গে দেখা যাচ্ছে সাংসদ সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শান্তনু সেন, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য প্রমুখকে।
রাজঘাটের সামনে জড়ো হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি থেকে ‘বঞ্চিত’ মানুষজনেরা। গোটা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। রাজঘাটে এমনিতেই কড়া পুলিশি প্রহরা থাকে। সোমবার গান্ধীজয়ন্তী হওয়ার কারণে সকাল থেকেই সেখানে গান্ধীকে শ্রদ্ধা জানাতে যান রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী-সহ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যেরা। তার উপর সেখানে তৃণমূলের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি থাকায় নিরাপত্তা আরও আঁটসাঁট করা হয়েছে।
একে একে রাজঘাটে পৌঁছতে শুরু করলেন তৃণমূল নেতারা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজা, মদন মিত্র প্রমুখেরা। দলের মুখপাত্র কুণাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “তৃণমূলের জন্যই রাজ্যের নেতাদের দিল্লি পাঠাতে হচ্ছে বিজেপিকে।”
অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের ‘অতিসক্রিয়তা’র জবাব গান্ধীগিরির মাধ্যমেই দিতে চায় রাজ্যের শাসক তৃণমূল। মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিবসে নিজের এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, গান্ধীর অহিংস পথেই চলতে চান তাঁরা। তবে মহাত্মার বিচার এবং সমানাধিকারের দাবিতে যে লড়াই, তাঁকেও অনুসরণ করার কথা বলেছেন অভিষেক। যা থেকে মনে করা হচ্ছে, রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের ‘বঞ্চনা’কে সামনে রেখে যে লড়াইয়ের বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল, তাকে অহিংস পথেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চান দলের সেনাপতি অভিষেক।
সোমবার সকালেই অম্বেডকর ভবনে যায় দিল্লি পুলিশের একটি দল। ক’টি বাস এসেছে, ক’টি বাস আসার সম্ভাবনা রয়েছে, দিল্লিতে আসা কর্মীসমর্থকদের দেখভালের দায়িত্বে কারা রয়েছেন, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেয় পুলিশ। পুলিশের এই ‘অতি সক্রিয়তা’ নিয়েই প্রশ্ন ওঠে তৃণমূলের অন্দরে। উল্লেখ্য যে, দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন, যে মন্ত্রকের দায়িত্বভার সামলান নরেন্দ্র মোদী মন্ত্রিসভা ‘নম্বর টু’ অমিত শাহ। তাই এই ‘সক্রিয়তা’র নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন তৃণমূলের কেউ কেউ। যদিও প্রকাশ্যে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।
দলীয় কর্মী-সমর্থক এবং একশো দিনের কাজের জব কার্ড হোল্ডারদের দিল্লি পৌঁছল তৃণমূলের একাধিক বাস। বাসযাত্রীদের প্রত্যেককেই রাখা হয়েছে সেখানকার অম্বেডকর ভবনে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ভবনে বিশ্রাম নিয়েই কর্মসূচিতে অংশ নেবেন দলের কর্মী এবং কেন্দ্রীয় প্রকল্প থেকে ‘বঞ্চিত’ মানুষজনেরা।