Kamarhati Beating Incident

কামারহাটির ভিডিয়ো-সূত্রে এ পর্যন্ত জয়ন্তের ছয় সঙ্গী গ্রেফতার! নির্যাতিতদেরও খোঁজ চলছে, বলল পুলিশ

কামারহাটির ভিডিয়োকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত জয়ন্ত সিংহের ছয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানালেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৪ ১২:০১
Share:

মারধরের এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবি: এক্স (সাবেক টুইটার)।

কামারহাটির ভিডিয়োকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত জয়ন্ত সিংহের ছয় সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানালেন ব্যারাকপুর কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার অলোক রাজোরিয়া। বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি। ভিডিয়োকাণ্ডে নির্যাতিতদেরও খোঁজ চলছে বলে জানানো হয়েছে। ভিডিয়োটি যত পুরনোই হোক, ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছে পুলিশ।

Advertisement

বুধবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার। তিনি জানান, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে আড়িয়াদহের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রাহুল গুপ্ত নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে মোবাইল ফোন চুরির ঘটনা ঘটে। কিন্তু তিনি থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। চুরির ঘটনায় এক দম্পতির দিকে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের একাংশের। কামারহাটির আড়িয়াদহ তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে ওই দু’জনকে নিয়ে এসে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। (যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)

বুধবার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ভিডিয়োতে যাঁকে মারধর করতে দেখা গিয়েছে, তিনি ‘খুব সম্ভবত’ পুরুষ। তবে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে। এই ধরনের আইন হাতে তুলে নেওয়ার ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত জয়ন্ত অনুগামী হিসাবে পরিচিত অভিষেক বর্মণ, সুভাষ বেরা এবং সুমন দে-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অধরা দু’জনের খোঁজেও তল্লাশি চলছে।

Advertisement

কামারহাটিতে মারধরের ভিডিয়োটি সোমবার রাতে সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির তরফেও তা পোস্ট করা হয়। বিজেপি ওই ভিডিয়ো পোস্ট করে লেখে, ‘‘কামারহাটির তালতলা ক্লাবে মদন-ঘনিষ্ঠ জয়ন্ত সিংহ কী ভাবে নিরস্ত্র মহিলাকে মারছেন, দেখা যাচ্ছে। যে রাজ্যের সরকার নারীদের সুরক্ষা নিয়ে গর্ব করে, সেখানে এই বর্বরতা মানবতার কলঙ্ক। এর দ্রুত তদন্ত এবং বিচার চাই।’’ ভিডিয়ো প্রসঙ্গে বিজেপির পাল্টা পোস্ট করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র ঋজু দত্ত এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে লেখেন, ‘‘এটি ২০২১ সালের মার্চ মাসের ভিডিয়ো। অভিযুক্তেরা জয়ন্ত সিংহ এবং তাঁর অনুগামী। ভিডিয়োতে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত দু’জন এখন জেলে।’’ সম্প্রতি আড়িয়াদহে মা এবং ছেলেকে রাস্তায় ফেলে মারধরের যে ঘটনা ঘটেছিল, সেখানেও অভিযুক্ত ছিলেন জয়ন্ত এবং তাঁর অনুগামীরা। সেই ঘটনায় জয়ন্ত গ্রেফতার হন।

ভিডিয়োতে দেখা যায়, হাত এবং পা ধরে রেখেছেন জনা চারেক মিলে। চ্যাংদোলা করে ঝুলিয়ে রাখা অবস্থাতেই চলছে মারধর। কয়েক জন মিলে ঘিরে ধরে, নানা দিক থেকে লাঠিপেটা করে চলেছেন অনবরত। ভিডিয়োটি যে পুরনো, তা মেনে নেন এলাকাবাসীদের একাংশও। তাঁদের বক্তব্য, এলাকায় জয়ন্তের লোকজনের দাপট রয়েছে। নানা ভাবে এলাকায় তাঁরা ত্রাস সৃষ্টি করেন। ভাইরাল ভিডিয়োয় যাঁদের দেখা গিয়েছে, তাঁদের কয়েক জনকে শিবম গুপ্ত, রাজদীপ বর্মণ, লালু, গঙ্গা, লাল, দীপু, সুমন নামে চিহ্নিত করেন স্থানীয়েরা। সকলেই জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া আরও একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, অন্ধকার ঘরে পিস্তল চালানোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তন্ময় ধর ওরফে বাপ্পা নামের এক ব্যক্তি। তিনিও কামারহাটি এলাকায় জয়ন্তের অনুগামী হিসাবেই পরিচিত। এই ঘটনাটিরও তদন্ত চলছে বলে বুধবার জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার। (যদিও এই ভিডিয়োটিরও সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)

পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, ২০২৩ সালেও এক বার গ্রেফতার হয়েছিলেন জয়ন্ত। দীর্ঘ দিন জেলে ছিলেন। পরে বন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। কোনও রকম অপরাধমূলক কাজ করার সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েই জয়ন্ত জেলমুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বন্ডের শর্ত লঙ্ঘন করায় জয়ন্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানান পুলিশ কমিশনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement