(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পার্থ চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ঘটনা ‘অবিশ্বাস্য’। শুক্রবার আদালত চত্বরে ঘনিষ্ঠদের কাছে এমনটাই বললেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, এই বিষয়ে সবটা তিনি জানেন না। যেটুকু শুনেছেন, তাতে ‘অবিশ্বাস্য’ লাগছে।
শুক্রবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে হাজির করানো হয় নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থকে। আদালত চত্বরে ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ খোলেন পার্থ। তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত কুণাল ঘোষ-সহ বিভিন্ন বিষয়ে মুখ খুলেছেন তিনি। রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ নিয়েও প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানান, রাজ্যপালের ঘটনা ‘অবিশ্বাস্য’। এর পর তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, রাজ্যপাল কি এ রকম করতে পারেন? অভিযোগ যা হচ্ছে, তা কি ঠিক? তার জবাবে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সব তো জানি না। যা শুনছি সেটা অবিশ্বাস্য।’’
রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে হেয়ার স্ট্রিট থানায় গিয়েছিলেন তিনি। পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তাঁর সঙ্গে কবে কখন কী হয়েছে, তা সবিস্তারে পুলিশকে বলেছেন। এ নিয়ে সরব হয় রাজ্যের শাসকদল। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘একটি মেয়ের শ্লীলতাহানি হয়েছে। এটা তো ক্ষমাযোগ্য নয়। এটার তো বিহিত হওয়া দরকার।’’
এর পরেই রাজ্যপালের তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, সত্যি সামনে আসবে। ভোটের সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যাঁরা এ রকম রছেন, ঈশ্বর তাঁদের মঙ্গল করুন। রাজভবন থেকেও বৃহস্পতিবার রাতেই জারি করা হয় একটি বিবৃতি। রাজ্যপাল তাতে জানান, রাজভবন চত্বরে পুলিশকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। ভোটের বাজারে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের খুশি করার জন্য অবৈধ, অননুমোদিত তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে ছদ্মবেশী পুলিশকে বরদাস্ত করবেন না তিনি। একই সঙ্গে রাজ্যপালের সম্মানহানি এবং অসাংবিধানিক বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও। এ বার এই নিয়ে মুখ খুললেন জেলবন্দি পার্থও।
তার পরেই আবার কুণালের প্রসঙ্গে কথা বলেন পার্থ। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, লোকসভা ভোটের মধ্যে কুণালকে দলীয় পদ থেকে বাদ দেওয়ার ফলে দলের ক্ষতি হবে কি না! পার্থ ঘনিষ্ঠদের বলেন, ‘‘শূন্য প্রতিক্রিয়া (জ়িরো ইমপ্যাক্ট) হবে।’’ তাঁকে দলে জায়গা দেওয়াটাও ভুল হয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ মহলে মত প্রকাশ করেছেন পার্থ। হাই কোর্টের রায়ে ২৬ হাজার শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীর চাকরি গিয়েছে। চাকরি যাওয়া নিয়ে পার্থ চুপ থাকলেও শুধু বলেন, ‘‘আমি এখনও বলব, আমি নিয়োগকর্তা নই। যাঁরা দুর্নীতির জন্য আমাকে দায়ী করছেন, তাঁরা আইন জানেন না।’’