সন্দেশখালি থানা থেকে বদলি হল ওসি বিশ্বজিৎ সাঁপুইয়ের। ছবি: সংগৃহীত।
সন্দেশখালি থানার ওসি বদল। ওসি বিশ্বজিৎ সাঁপুইকে সন্দেশখালি থেকে পাঠানো হল বসিরহাটে। মাত্র তিন মাস আগে দায়িত্ব পেয়ে সন্দেশখালিতে এসেছিলেন বিশ্বজিৎ। তাঁকে বসিরহাট থানায় বদলি করে দেওয়া হয়েছে। পরিবর্তে সন্দেশখালি থানায় নতুন দায়িত্ব পেয়েছেন গোপাল সরকার।
সন্দেশখালি থানার নতুন ওসি গোপাল সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
তিন মাস আগে হাড়োয়া থানা থেকে সন্দেশখালিতে এসেছিলেন বিশ্বজিৎ। ওই সময় থেকেই রাজ্য রাজনীতির খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে সন্দেশখালি। শাহজাহান শেখের বাড়িতে ইডির হানা, ইডি আধিকারিকদের উপর হামলা এবং শাহজাহানদের গ্রেফতারির দাবিতে সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ তাঁর সময়েই হয়েছে। সেই ওসিকে সরিয়ে দেওয়া হল সন্দেশখালি থানা থেকে। আপাতত তিনি বসিরহাট থানার দায়িত্ব সামলাবেন। এ প্রসঙ্গে বসিরহাট পুলিশ সুপার অবশ্য দাবি করেছেন, এটি রুটিন বদলি। নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ নেই।
এর আগে কাজে যোগ দেওয়ার মাত্র এক মাসের মধ্যে বদলি করা হয়েছিল বসিরহাট থানার আইসি কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়কে। সিআইডি ইনস্পেক্টর হিসাবে বদলি করা হয়েছে তাঁকে। তাঁর জায়গায় বসিরহাট থানার আইসি হন রক্তিম চট্টোপাধ্যায়। তিনি পূর্ব বর্ধমানের সিআই ছিলেন।
গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালিতে গিয়েছিল ইডি। রেশন মামলার তদন্তের সূত্রে শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে বাধা পায় তারা। শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে মারও খেতে হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। এর পর থেকে শাহজাহান গা ঢাকা দেন। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ৫৫ দিন পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য পুলিশ মিনাখাঁ থেকে শাহজাহানকে গ্রেফতার করে। প্রথমে তিনি সিআইডির হেফাজতে ছিলেন। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে তাঁকে তুলে দেওয়া হয় সিবিআইয়ের হাতে। বর্তমানে শাহজাহানের ঠিকানা নিজাম প্যালেস।
সন্দেশখালিতে গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার, মারধর, জমি জবরদখল, চাষের জমিতে নোনা জল ঢুকিয়ে দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে শাহজাহান এবং তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। তাঁদের গ্রেফতারির দাবিতে পথে নেমেছিলেন সন্দেশখালির মহিলারা। সেই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দিনের পর দিন উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ ছিল, শাহজাহানকে পুলিশই আশ্রয় দিয়েছে। গ্রামে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। গ্রেফতারির পর শাহজাহানকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করেছে তৃণমূল। তার পর বৃহস্পতিবার সন্দেশখালিতে গিয়েছিল সিবিআইয়ের একটি দল। শাহজাহানের বাড়ি, অফিস এবং সন্দেশখালির গ্রামে একাধিক বাড়িতে তল্লাশি চালায় তারা।