(বাঁ দিক থেকে) রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার আগের রাতে নতুন সঙ্কট তৈরি হল বিজেপিতে। দল ছেড়ে দিলেন ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। শুক্রবার রাতে দল ছাড়ার কথা জানিয়ে তিনি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে চিঠি দিয়েছেন। তাঁর দলত্যাগের ফলে ঝাড়গ্রামের মতো ‘শক্ত ঘাঁটিতেও’ পদ্মশিবিরে সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে মত অনেকের। ওই কেন্দ্র থেকে এ বার কাকে প্রার্থী করা হবে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
যদিও বিজেপি সূত্রে দাবি, ঝাড়গ্রামে এ বার টিকিট পেতেন না কুনার। ওই কেন্দ্রে অন্য প্রার্থীর খোঁজ চলছিলই। উঠে আসছিল একাধিক নাম। তবে এখনও ঝাড়গ্রামের প্রার্থী হিসাবে কারও নাম চূড়ান্ত করা যায়নি বলে খবর বিজেপি সূত্রে।
কিছু দিন আগে দলের এক বিধায়ককেও হারিয়েছে বিজেপি। রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে তৃণমূলের মিছিলে হাঁটতেও দেখা গিয়েছে। বিধায়কের সেই ‘বিয়োগ-বেদনা’ কাটতে না কাটতে এ বার সাংসদও দল ছাড়লেন।
কেন বিজেপি ছাড়লেন কুনার? তিনি কি অন্য কোনও দলে যোগ দিতে চলেছেন?
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন কুনার। সুগার রয়েছে তাঁর। হাঁটাচলাতেও সমস্যা রয়েছে। সে সব কারণেই আর রাজনীতিতে থাকতে চাইছেন না। উপরন্তু, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে না বলেও ইঙ্গিত পেয়েছিলেন কুনার।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপি সভাপতিকে দেওয়া পদত্যাগের চিঠি।
আনন্দবাজার অনলাইনকে কুনার জানান, তাঁর দলত্যাগের নেপথ্যে রয়েছে ব্যক্তিগত কারণ। কুনারের কথায়, ‘‘ব্যক্তিগত কারণেই দল ছাড়লাম। অন্য কোনও দলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা নেই।’’ তাঁকে এ বার টিকিট না দেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, সেই খবর পেয়েই কি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন? প্রশ্ন শুনে কুনার বলেন, ‘‘বিজেপিতে কে টিকিট পাবে না পাবে, সেটা ঘোষণা হওয়ার আগে তো বোঝা যায় না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আপাতত রাজনীতি থেকে দূরে থাকব।’’
বিজেপি সূত্রে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হিসাবে যে একাধিক নাম উঠে এসেছে, তার মধ্যে অন্যতম প্রণব টুডু। তিনি পেশায় চিকিৎসক। তাঁর কথা বলতে গিয়ে কুনার বলেন, ‘‘কে প্রার্থী হবেন আমি বলতে পারব না। অনেকেই লড়াইয়ে আছেন। মৌসুমী মুর্মু, ক্ষুদিরাম টুডুদের নাম উঠে এসেছে। বাঁকুড়ার রামনাথকেও এ বার দিতে পারে টিকিট। তবে কোনওটাই আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।’’
কুনারের দলত্যাগ প্রসঙ্গে সুকান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত কারণে দল ছেড়েছেন। উনি কাজ করতে পারছিলেন না। ওঁর সাথে দলের কারও কোনও রাগারাগি নেই। আমি ওঁর চিঠি পেয়েছি।’’