(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় থাকছেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা অধুনা বিজেপি নেতা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার বিকেলে শিলিগুড়িতে সভা করবেন মোদী। সেই মঞ্চেই অভিজিৎকেও দেখা যাবে। সকালেই উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।
শনিবার সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ বাগডোগরায় নেমেছেন অভিজিৎ। উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতা শঙ্কর ঘোষ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে যান। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এর আগে সামনাসামনি সাক্ষাৎ হয়নি বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ। তাই শিলিগুড়ির সভা নিয়ে তিনি উত্তেজিত। প্রাক্তন বিচারপতির কথায়, ‘‘আমি অভিভূত, আমার শিহরন হচ্ছে। এই প্রথম ওঁকে আমি কাছ থেকে দেখব।’’ মোদীর সঙ্গে কথা বলবেন? অভিজিৎ বলেন, ‘‘অবশ্যই কথা বলার চেষ্টা করব। বিজেপি যে ভাবে আমাকে বুকে টেনে নিয়েছে তাতে আমি অভিভূত।’’ বিজেপির নীতি প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অভিজিৎ বলেছেন, ‘‘অনেকে বলেন, বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করে। সেটা ঠিক নয়। আমি এর তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দেব।’’
অভিজিৎ বাগডোগরায় নেমে বলেন, ‘‘রাজ্যে অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চলছে। এটা বেশি দিন চলতে পারে না। ৩৫৬ ধারা জারি হওয়া দরকার। সন্দেশখালিতে কী হল? মুখ্যমন্ত্রী বা সেখানকার সাংসদ এক বারও তো গেলেন না। ভোট যদি অবাধে হয়, আমার ধারণা বিজেপি খুব ভাল ফল করবে। এমনকি, তৃণমূল রাজ্য থেকে মুছেও যেতে পারে।’’
শনিবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
শনিবার মোদীর সভায় ভাষণও দিতে পারেন প্রাক্তন বিচারপতি। এ প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘‘ওঁর মতো প্রাজ্ঞ মানুষকে আমরা পেয়েছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে উনি লড়াই করে এসেছেন, আগামী দিনেও করবেন। ওঁর বিজেপিতে যোগদানের পর রাজ্যে প্রধানমন্ত্রীর এটা প্রথম সভা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই উনি সভায় থাকবেন।’’
হাই কোর্টের বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে গত ৭ মার্চ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন অভিজিৎ। বিচারপতি হিসাবে তাঁর জনপ্রিয়তা ছিল আকাশছোঁয়া। একাধিক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছেন তিনি। অভিজিতের বিজেপি-যোগদানের পর থেকেই তাই রাজ্যের শাসকদল তাঁর বিচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে। অভিজিৎও ধারাবাহিক ভাবে তৃণমূলকে আক্রমণ করে চলেছেন। তাঁর বক্তব্য, আদালতের গণ্ডিতে থেকে তিনি সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছতে পারছিলেন না। তাই বৃহত্তর ক্ষেত্রে মাঠে নামলেন। রাজ্য সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিজেপি সূত্রে খবর, সব কিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তমলুক থেকে প্রার্থী করা হতে পারে প্রাক্তন বিচারপতিকে।