ক্ষোভ: হেরিটেজ গেট নিয়ে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র
রাজ-নগর কোচবিহার শহরে ঢোকার মুখে তৈরি হচ্ছে ‘গ্র্যান্ড হেরিটেজ ওয়েলকাম গেট’। শিলিগুড়ি বা আলিপুরদুয়ার থেকে কোচবিহার প্রবেশের রাস্তায় খাগরাবাড়িতে ওই তোরণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী দু’মাসের মধ্যে পুরোপুরি কাজ শেষের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এ দিকে, ওই ওয়েলকাম গেট বা তোরণের গঠনশৈলি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
‘কোচবিহার নাগরিক কমিটি’র বৃহস্পতিবার ব্যানারে বেশ কিছু মানুষ ওই তোরণের সামনে জড়ো হন। প্রায় আধ ঘণ্টা তাঁরা কোচবিহার-খাগরাবাড়ি সড়ক অবরোধ করেন। তোরণ তৈরির কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, রাজ ঐতিহ্যের জন্যই কোচবিহার হেরিটেজ শহর। অথচ, তোরণ তৈরিতে রাজ ঐতিহ্যের কোনও ছাপ নেই। কোচবিহারের রাজ আমলের স্থাপত্যের গঠনশৈলির সঙ্গেও ওই তোরণের মিল নেই।
বিক্ষোভকারীদের কথা ঠিক নয় বলে দাবি করেন পূর্ত দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “এখন যে অবস্থায় মানুষ দেখছে, তা অবয়ব। বর্তমানে দু’টি গোলাকার গম্বুজ রয়েছে তোরণের দু’দিকে এবং মাঝে পাতার মতো একটি সুন্দর আকৃতি রয়েছে। সেখানে দু’দিকে দু’টি কোচবিহারের হেরিটেজ লোগোও ফুটিয়ে তোলা হবে। যে লোগোয় রাজার ছাপ সুস্পষ্ট রয়েছে। তা হেরিটেজ কমিশন দ্বারা স্বীকৃত। তোরণে অলঙ্কার দেওয়ার কাজ বাকি রয়েছে। পুরনো ঐতিহ্য নতুন মোড়কে তৈরি করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, “রাজা যে জিনিস ব্যবহার করেছেন, সে সবের নকল করা ঠিক নয়। তা হলে রাজার অমর্যাদা করা হবে। রাজ আমলের যেমন স্থাপত্য সংস্কার করছি, তেমন আমরা নতুন স্থাপত্য তৈরিও করছি। যা আগামী দিনে হেরিটেজ হয়ে উঠবে। পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে যে সমস্ত গেট তৈরি হয়েছে, তার মধ্যে এটি অন্যতম বিশিষ্ট হয়েওঠার দাবিদার।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানাগিয়েছে, ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকায় ওই তোরণ তৈরি হচ্ছে। গত বছর জুন মাস থেকে তোরণ তৈরির কাজ শুরু হয়। এ দিন আন্দোলনকারী নাগরিক মঞ্চের সদস্য হরিহর দাস দাবি করেন, “রাজার জন্যই এই শহর হেরিটেজ। অথচ, এই স্বাগত তোরণের মধ্যে তার কোনও ছাপ নেই। এটা ফের তৈরি করতে হবে। না হলে আমরা অনশনে বসব। যে তোরণ তৈরি করা হচ্ছে, তার নির্মাণশৈলি পুরোপুরি আলাদা।”
প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূল নেতা পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই ওয়েলকাম গেটের নকশার কাজ শুরু হওয়ার আগেই প্রকাশ করা হয়। সে সময়ে কেউ বিরূপমন্তব্য করেননি। সকলেরমতামতকে সম্মান জানিয়ে বলছি, অস্থিরতা বা কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে মতামত জেলাশাসকের দফতরে জানান।”