গুলমার্গে শীতে স্কি করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্কি করতে যাবেন নাকি সেখানে? ছবি: সংগৃহীত।
গত দু’দিনে ক্রমাগত তুষারপাতে ঢেকেছে কাশ্মীরের সোনমার্গ, অনন্তনাগ, বারামুল্লা-সহ বিভিন্ন স্থান। শীতের মরসুমে বরফের চাদরে ঢেকে যায় হিমাচল প্রদেশের সোলাং ভ্যালি থেকে উত্তরাখণ্ডের আউলিও। ঘন তুষার চাদরে উপত্যকা ঢেকে গেলেই শুরু হয় অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস। রকমারি ক্রীড়ার মধ্যে জনপ্রিয় স্কিইং।
জুতোর সঙ্গে যুক্ত থাকে স্কি। হাতে থাকে লাঠির মতো জিনিস। যার সাহায্যে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে হয়। বরফের চাদরে স্কি করে অনেক দূর পর্যন্ত সহজে চলে যাওয়া যায়। এক বার এই খেলায় দক্ষ হয়ে উঠলে বরফাঢাকা উপত্যকায় রোমাঞ্চের হাতছানি এড়ানো কঠিন।
এই শীতে একবার স্কি করতে যাবেন নাকি? ভারতের নানা প্রান্তে রয়েছে স্কিইংয়ের প্রশিক্ষণের সুযোগ।
গুলমার্গ, কাশ্মীর
জানুয়ারি মাসে ঘন তুষার চাদরে ঢেকে যায় কাশ্মীরের গুলমার্গ। বহু মানুষ এখানে স্কিইংয়ের প্রশিক্ষণের জন্য আসেন। বেসিক, অ্যাডভান্সড বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। প্রশিক্ষণ ছাড়াও অবশ্য স্কি করতে পারেন, নিছক আনন্দের জন্য।
গুলমার্গে গন্ডোলা রোপওয়ে করে প্রথমে পৌঁছতে হয়ে ফেজ় ওয়ানে। সেখানে ২.৭ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে স্কিইং হয়। পেশাদাররা ছাড়াও শখে অনেকে স্কি করেন এখানে। ফেজ় ওয়ান থেকে চেয়ার কেবল কারে ফেজ টু-তে যাওয়া যায় উন্নততর প্রশিক্ষণের জন্য।
কী ভাবে যাবেন?
বিমানে শ্রীনগর এসে গাড়িতে গুলমার্গ। ট্রেনেও আসা যায় জম্মুতে। সেখান থেকে গাড়িতে গুলমার্গ। গুলমার্গে ফেজ় ওয়ানে যাওয়ার জন্য রয়েছে কেবল কার।
কোথায় থাকবেন?
স্কিইংয়ের প্রশিক্ষণ দেয় একাধিক সংস্থা। প্যাকেজ় বুক করলে গুলমার্গেই বিলাসবহুল হোটেলে বরফের মধ্যে থাকা যায়। শখে এক দিন স্কি করতে চাইলে শ্রীনগরে হোটেল বা হাউসবোটে থেকে গাড়িতে গুলমার্গে যেতে পারেন।
আউলি, উত্তরাখণ্ড
আউলিতে স্কিইং। ছবি: সংগৃহীত।
শীতের মরসুমে তুষার চাদরে ঢেকে যায় আউলি। চারপাশ শুধু সাদা হয়ে থাকে তখন। হোটেলের ছাদে বরফ। দেখলে মনে হবে আস্ত গ্রামটাই বরফের। সেই বরফে স্কিইংয়ের জন্য দূরদূরান্ত থেকে আসেন লোকজন। শ্বেতশুভ্র নন্দাদেবী শৃঙ্গের রূপ দর্শন করতে করতেই বরফে ঘুরে বেড়াতে হলে এখানে এসে কয়েকটা দিন স্কিইং শেখার জন্য ব্যায় করতে পারেন। শীতের মরসুমে স্কিইংয়ের প্রতিযোগিতাও হয় এখানে। ৩ হাজার মিটার উচ্চতায় ৩ কিলোমিটার উপত্যকা জুড়ে স্কিইং হয়।
আউলি যেতে পারেন যোশীমঠ থেকে। তবে, চাপতে হবে রোপওয়ে।
কী ভাবে যাবেন?
ট্রেনে হৃষীকেশ গিয়ে সেখান থেকে যোশীমঠ। যোশীমঠ থেকে আউলি। বিমানে দেহরাদূন পৌঁছে সেখান থেকে গাড়িতে আউলি বা যোশীমঠ হয়ে আউলি যাওয়া যায়।
কোথায় থাকবেন?
বরফের মধ্যে হুটোপাটি করতে চাইলে আউলিতে হোটেলে থেকে যেতে পারেন। সেখানে একাধিক বিলাসবহুল হোটেল রয়েছে। যোশীমঠেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।
সোলাং, হিমাচল প্রদেশ
মানালি শহরের বদলে ইদানীং সেখান থেকে ৩৮ কিলোমিটার দূরে সোলাং ভ্যালিতে থাকতে এবং ঘুরতে পছন্দ করছেন পর্যটকেরা। ডিসেম্বরের শেষ থেকেই বরফ পড়া শুরু হয়ে যায়। মোটামুটি মার্চ পর্যন্ত বরফে ঢাকা থাকে সোলাং। রোপওয়ে নিয়ে যায় পাহাড়ের উপরে তুষার ঢাকা উপত্যকায়। সেখানেই সুযোগ রয়েছে স্কিইংয়ের। প্রচুর মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে স্কিইং শিখতে আসেন।
কী ভাবে যাবেন?
ট্রেনে দিল্লি, কালকা বা চণ্ডীগড় গিয়ে সেখান থেকে গাড়িতে মানালি। বিমানে ভুনটার বা চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে গাড়িতেও পৌঁছনো যায় মানালি।
কোথায় থাকবেন?
মানালি শহরের পাশাপাশি সোলাং ভ্যালির কাছাকাছিও বিলাসবহুল রিসর্ট আছে। চাইলে মানালিতে হোটেল বা হোম স্টে-তে থাকতে পারেন।