হয়রান: গৌড় এক্সপ্রেসে দুষ্কৃতী হামলার শিকার দেবলীনা সিংহ। সেই আঘাত দেখাচ্ছেন তিনি। পাশে রয়েছেন স্বামীও। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসার জন্য স্বামীকে নিয়ে কলকাতা গিয়েছিলাম। একটা দুর্ঘটনায় আমার স্বামীর হাত ভেঙেছে। ওঁকে দেখিয়ে গৌড় এক্সপ্রেস ধরেছিলাম শুক্রবার। আমরা ইংরেজবাজারের সানি পার্ক এলাকার বাসিন্দা। গৌড় এক্সপ্রেসের দ্বিতীয় শ্রেণির টু-টিয়ার বাতানুকূল কামরায় ছিলাম আমরা। আমার স্বামী নীচের বার্থে ছিলেন। আর আমি একদম উপরের বার্থে। তখন রাত আড়াইটে হবে। ঘুমের ঘোরে মনে হচ্ছিল, আমার মোবাইল ফোনটা পড়ে যাচ্ছে নীচে। হঠাৎ ঘোর কেটে গেল। দেখি, আমার ব্যাগ নিয়ে দরজার দিকে ছুটছে এক যুবক। ‘চোর চোর’ চিৎকার করতে শুরু করি। বার্থ থেকে নেমে ছুটে গিয়ে ওই যুবককে ধরে ফেলি। সেই সময় দেখলাম, আরও কয়েক জন যুবক কামরায় ছুটছে। পাথর দিয়ে আমার হাতে আঘাত করে ওরা। আমার সঙ্গে আরও এক মহিলা যাত্রী ও তাঁর স্বামী (যিনি বিএসএফের আধিকারিক) ছিলেন। তাঁরাও দুষ্কৃতীদের ধরার চেষ্টা করেন। ওই মহিলাকেও মারধর করে ওরা। এরপরে চেন টেনে ট্রেন থেকে নেমে যায় দুষ্কৃতীরা। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে এমন ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটে গল। অথচ, এক জন রেল পুলিশেরও দেখা মেলেনি। উধাও টিকিট পরীক্ষকেরাও। দীর্ঘ ক্ষণ পরে তাঁরা হাজির হন কামরায়। রেল পুলিশ তৎপর হলে কয়েক জন দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলা সম্ভব হত। এখনও বুঝতে পারছি না, বাতানুকূল কামরার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোচে কী ভাবে দুষ্কৃতীরা ঢুকে পড়তে পারে। টাকা খরচ করেও ট্রেনে নিরাপত্তা মিলছে না। এমন হলে ট্রেনে যাতায়াতই তো দায় হয়ে পড়বে।