—প্রতীকী ছবি।
দলীয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা চাওয়ার দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলের জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠল। পঞ্চায়েত ভোটের আবহে সমাজমাধ্যমে সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় শোরগোল পড়েছে জেলার রাজনীতিতে। বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শাসকদলের যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেই মৃণাল সরকার অবশ্য সব অস্বীকার করেছেন। ‘বিজেপির চক্রান্ত’ বলে গোটা বিষয়টিই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, দলবিরোধী কাজ করার অভিযোগে রবিবার সকালে জেলার ১৯ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন মৃণাল। তার পরেই এমন ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার বিকেলে সমাজমাধ্যমে মৃণালের তিনটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসে। সেই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। বিরোধীদের বক্তব্য, ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মৃণাল যাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন, অঞ্চল সভাপতি করে দেওয়ার নামে তাঁর কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন। এ নিয়ে টুইট করে সুকান্ত লিখেছেন, ‘‘এটা নতুন কিছু না। তৃণমূলের টিকিট থেকে পদ সবই টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়। দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূল জেলা সভাপতিও তাই টাকা চাইবেন। এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। এটা তৃণমূলের ব্যবসা। টাকা দিয়েই পদ নেবেন, আবার সেই টাকা তুলবেন।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরুপ চৌধুরীও বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি থেকে শুরু তৃণমূলের সব স্তরের নেতারা চুরির সঙ্গে যুক্ত। এটা সত্যিই গণতন্ত্রের কাছে লজ্জার বিষয়।’’
পঞ্চায়েত ভোটের টিকিট বিক্রির অভিযোগ নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্দরের কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। গঙ্গারামপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে গোঁজ কাঁটা নিয়েও কার্যত চিন্তিত শাসকদল। এই পরিস্থিতিতে ১৯ জন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিছু দিন আগে টাকার বিনিময়ে প্রার্থী করানোর অভিযোগ তুলে কুশমন্ডি বিধানসভার বিধায়ক রেখা রায়ের স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন গঙ্গারামপুরের তৃণমূল কর্মীদের একাংশ। বিধায়কের স্বামীর বিরুদ্ধে যে মহিলা কর্মী মূলত অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকেই দল থেকে ‘বহিষ্কার’ করেছে তৃণমূল। বহিষ্কৃতদের মধ্যে রয়েছেন গঙ্গারামপুর ব্লকেরই ছয় নেতা। এক দলীয় সূত্রের দাবি, জেলা সভাপতির ভিডিয়ো ভাইরাল করার পিছনে ‘বিদ্রোহী’দের হাত থাকতে পারে।
এই ঘটনার জন্য মৃণাল অবশ্য সরাসরি বিজেপিকেই বিঁধেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এটা দীর্ঘ দিন আগেকার একটা ঘটনা। তখন আমি ব্লক সভাপতি ছিলাম। তখন কেউ এটা তুলে থাকবেন। আমি ঘুমোচ্ছিলাম। তখনি কেউ এক জন এ সব বলেন, প্রশ্ন করেন এবং টাকা দিতে চান। আমি তার কোনও উত্তর দিইনি। বিজেপির আইটি সেল ভোটের আগে বদনাম করার জন্যই এ রকম ভিডিয়ো ভাইরাল করছে।’’