নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করল সিবিআই। অভিযোগ, প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি ‘এজেন্ট’ হিসাবে কাজ করতেন। বিভিন্ন সময়ে এই সন্তুর কাছেই নাকি জমা পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা!
সোমবার ওই মামলায় সন্তুকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এর আগে ইডির চার্জশিটেও নাম ছিল সন্তুর। সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনেছিল ইডি। সন্তু রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থের বিধানসভা এলাকা বেহালার বাসিন্দা। একটা সময়ে তৃণমূলের সঙ্গেও জড়িত ছিলেন। অভিযোগ, সন্তুর সঙ্গে হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নিয়োগকাণ্ডে অভিযুক্ত হুগলির ব্যবসায়ী অয়ন শীলদেরও যোগাযোগ ছিল।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে একাধিক বার সন্তুর নাম উঠে এসেছে। তল্লাশি চালানো হয়েছে তাঁর বাড়িতেও। এমনকি, তাঁকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে সিবিআই। নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে অয়ন শীলকে ইডির জেরার সময়েই প্রথম উঠে এসেছিল সন্তুর নাম। জেরায় ইডির কাছে অয়ন স্বীকার করেন, পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ সন্তুর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। অয়ন আরও জানান, ২০১২ এবং ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়োগের জন্য ৪৫ কোটি টাকা তাঁকে দিয়েছিলেন বিভিন্ন জেলার এজেন্টরা। এর মধ্যে ২৬ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা অয়ন দিয়েছিলেন বেহালার সন্তুকে। কুন্তলই তাঁকে বলেছিলেন ওই টাকা সন্তুকে দিতে। জেরায় ইডিকে একই কথা জানান শান্তনুও। শুধু তা-ই নয়, শান্তনু দাবি করেন, বেহালার সন্তু এবং হুগলির কুন্তল— দু’জনেই পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ ছিলেন। অয়ন এবং পার্থের মধ্যে তাঁরা সেতু হিসাবে কাজ করতেন। পৌঁছে দিতেন চাকরিপ্রার্থীদের অর্থ।
সোমবারই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। সোমবার কলকাতার বিচার ভবন তাঁকে জামিন দিয়েছে। ২০২২ সালের ২৩ জুলাই দীর্ঘ তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর পার্থ ও অর্পিতাকে গ্রেফতার করেছিল ইডি। তল্লাশির সময় অর্পিতার টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট এবং বেলঘরিয়ার বাড়ি থেকে নগদ বহু কোটি টাকা উদ্ধার হয়। উদ্ধার হয় বিদেশি মুদ্রা এবং সোনার গয়নাও। তবে অর্পিতা জামিন পেলেও বর্তমানে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি রয়েছেন পার্থ। ইডির পর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইও অভিযোগ আনে। দুই মামলাই এখনও বিচারাধীন। ইতিমধ্যে বহু বার জামিনের আবেদনও করেছেন পার্থ। কিন্তু তা মঞ্জুর হয়নি।