এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে মালদহের তিন তরুণ। — নিজস্ব চিত্র।
বইতে পড়েছিলেন। এ বার নিজেরাই প্রশিক্ষণ নিয়ে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প পর্যন্ত ট্রেক করলেন মালদহের তিন যুবক। ১১ দিন ধরে ট্রেকিংয়ের পর সদ্য বাড়ি ফিরেছেন ওই তিন জন। তাঁদের বার্তা, শারীরিক এবং মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকলে তবেই সফল হবে অভিযান।
এভারেস্ট বেস ক্যাম্পের উচ্চতা ৫ হাজার ৩৬৪ মিটার। সেই বেস ক্যাম্প পর্যন্ত ট্রেক করার লক্ষ্য নিয়েছিলেন মালদহের চাঁচলের তিন যুবক তরুণকুমার রায়, প্রিয়জিৎ সরকার এবং পার্থ রজক। তাঁরা সকলেই চাঁচলের চলের বাসিন্দা। তরুণ চাঁচলের সদরপুর স্কুলের সহ-শিক্ষক, প্রিয়জিৎ সরকার চাঁচলের সিদ্ধেশ্বর ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক এবং পার্থ চাঁচল-১ ব্লকের খাদ্য সরবরাহ দফতরের কর্মী। কিন্তু, তাঁদের স্বপ্ন ধাক্কা খায় শুরুতেই। মালদহে পর্বতারোহণের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কোনও সংস্থা নেই। কিন্তু, এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছতে ১১ দিনের ট্রেক করতে হয়। এই ট্রেক করতে প্রয়োজন শারীরিক সক্ষমতা। চাই অদম্য মানসিক জোরও। প্রাথমিক ভাবে ধাক্কা খেলেও ভেঙে পড়েননি তিন তরুণ। এ নিয়ে পড়াশোনা করে তাঁরা নিজেরাই শুরু করেন নিজেদের প্রশিক্ষণ। এর পর তিন অভিযাত্রী বেরিয়ে পড়েন ট্রেকিংয়ে।
নিজেদের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা শোনালেন শিক্ষক প্রিয়জিৎ। তিনি বলেন, ‘‘বইতে পড়েছিলাম এভারেস্টের কথা। এ বার তার কিছুটা কাছাকাছি পৌঁছলাম। বেস ক্যাম্প যাওয়ার জন্য আমরা তিন জন তিন মাস আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলাম। চাঁচলের স্টেডিয়ামে প্রতি দিন সিঁড়ি ভাঙা অভ্যাস করতাম। রাতে ১০ কিলোমিটার হাঁটতাম। মনের জোর ছাড়া এই ট্রেক অসম্ভব। একটা সময় আমার মনে হয়েছিল, শরীর পারছে না। কিন্তু মনকে বুঝিয়েছিলাম, আমাকে পারতেই হবে। এই মনের জোরটাই আমাদের এগিয়ে দিয়েছে লক্ষ্যের দিকে।”
অভিযাত্রীরা জানিয়েছেন, ৮ অক্টোবর তাঁদের এভারেস্ট বেস ক্যাম্পে পৌঁছনর কথা ছিল। কিন্তু, আবহাওয়া খারাপ থাকায় ঘুরপথে যেতে হয় তাঁদের। ১০ই অক্টোবর খাড়িখোলা থেকে শুরু হয় তাঁদের অভিযান। ১১ দিন ধরে পথে কঠোর পরিশ্রমের পর ট্রেক এজেন্সির থেকে শংসাপত্র পেয়েছেন তিন অভিযাত্রী। প্রিয়জিতের সহ-অভিযাত্রী পার্থ বলেন, ‘‘এমন অভিযানের জন্য শারীরিক সক্ষমতার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও তৈরি থাকতে হবে। আমাদের কাছে এমন অভিযান একটা নেশা। আগামীতে আমাদের লক্ষ্য আরও দুর্গম কোনও জায়গায় ট্রেকে যাওয়া। আমরা চাই, আরও অনেকে এগিয়ে আসুক।’’