মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে এ বার আশ্বাসের বাণী শোনা গেল মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের গলায়। কিন্তু তা-ও বিষয়টি নিয়ে সরকারি কর্মীদের কিছুটা হলেও ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী। শনিবার বিধানসভায় ডিএ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সঠিক সময় মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেবেন। মমতা চান সরকারি কর্মীরা ভাতা পান। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে সাধারণ মানুষের কথাও ভাবতে হয়। তিনি রাজ্যে গরিব মানুষের কথা মাথা রেখে বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছেন। তাঁদের কথাই আগে ভাবতে হচ্ছে।’’মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক দিকের কথা তুলে ধরে শোভনদেব আরও বলেন, ‘‘যাঁরা ডিএ পাচ্ছেন না, তাঁরা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পান। কিন্তু যাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পগুলি করেছেন, তাঁরা প্রতিদিন বাজারে যেতে পারেন না। দু’বেলা হয়তো ঠিক মতো খেতেও পান না। তাই মুখ্যমন্ত্রী সেই সব মানুষের কথাও ভাবছেন।’’
চলতি বছরের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটাতে হবে রাজ্য সরকারকে। যার জেরে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্তু সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের ডিএ ৩৪ থেকে ৩৮ শতাংশ হওয়ার পরেই, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৩৫ শতাংশ ডিএ-র দাবিতে সরব হয়েছে। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যেই ডিএ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। কিন্তু রায় পুনর্বিবেচনা করার রাজ্যের আর্জি খারিজ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। আগের রায়ই তাঁরা বহাল রাখেন। শুক্রবার ডিএ সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে একটি হলফনামা দায়ের করেছে। যার ভিত্তিতে রাজ্যের সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি মনে করছে, ডিএ মামলা নিয়ে রাজ্য সরকার শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে চলেছে। তার মধ্যেই মন্ত্রী শোভনদেবের এহেন বক্তব্যে আস্থা রাখতে নারাজ রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য সরকারের হলফনামা দেখেই বুঝেছি, আমাদের আরও কঠিন লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা সব রকম লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত। তাই আমাদের কাছে মন্ত্রীর বক্তব্যের কোনও যৌক্তিকতা নেই।’’
তৃণমূল সমর্থিত কমর্চারী ফেডারেশনের নেতা মনোজ চক্রবর্তীর বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এখনও সরকারি কর্মচারীরা আস্থাশীল। তাই আদালতে না গিয়ে সরকারের উচিত হবে দ্রুত আলোচনায় বসে ডিএ নিয়ে সদর্থক সিদ্ধান্ত নেওয়া।’’