তিস্তার চরে ত্রিশক্তি কোরের যুদ্ধ মহড়া। নিজস্ব চিত্র।
মুহুর্মুহু চলছে বোমা, গুলি। নাগাড়ে মর্টার আর গোলাবর্ষণ। এক নজরে দেখে মনে হবে যুদ্ধ চলছে। আদতে চলছে ভারতীয় সেনার যুদ্ধাভ্যাস। যার পোশাকি নাম ‘কৃপাণ শক্তি’।
ভারত-চিন সীমান্তের অদূরে উত্তরবঙ্গে মঙ্গলবার থেকে এই যুদ্ধের মহড়া শুরু করেছে সেনার শিলিগুড়ি-স্থিত ৩৩ নম্বর কোর (ত্রিশক্তি কোর)। সঙ্গে রয়েছে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি), ভারত তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)-সহ কয়েকটি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীও। সেনা সূত্রের খবর, লাদাখের ঘটনা নজরে রেখে সিকিমের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সম্ভাব্য চিনা হামলা মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতেই মালবাজারের অদূরে তিস্তার চরে এই ‘ইন্টিগ্রেটেড ফায়ার এক্সারসাইজ’।
ডুয়ার্সের বাগরাকোট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সাওগাঁও বস্তির দক্ষিণে তিস্তার সঙ্গে মিসেছে দুই পাহাড়ি নদী লিস ও ঘিস। অপর প্রান্তে বৈকুন্ঠপুর বনাঞ্চল। এই এলাকাটি গোলন্দাজ বাহিনীর চাঁদমারি হিসাবে পরিচিত। শিলিগুড়ি শহরের অদূরে সেই তিস্তা ‘ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জ’-এ ত্রিশক্তি কোরের যুদ্ধ মহড়ার মঙ্গলবার ছিল, সেনার বিভিন্ন ধরনের মর্টার ও কামান, বিএমপি সিরিজের ‘ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল (সাঁজোয়া গাড়ি), ট্যাঙ্ক এমনকি, ভারতে তৈরি হালকা যুদ্ধ হেলিকপ্টার ‘ধ্রুব’।
ত্রিশক্তি কোর-এর কৃপাণ ডিভিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার আন্তর্জাতিক সীমান্তে রাতের বেলায় এবং পাহাড়ি এলাকায় এই ধরনের অপারেশনের জন্য সেনাবাহিনী সব সময়েই তৈরি থাকে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এরই জন্য এমন প্রস্তুতির মহড়া নিয়মিত ব্যাবধানে করা হয়।
মঙ্গলবারের যুদ্ধ মহড়ায় উপস্থিত ছিলেন, ত্রিশক্তি কোর-এর জিওসি লেফটেন্যান্ট জেনারেল তরুণ কুমার আইচ, জেলার পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত, বন্যপ্রাণী বিভাগের সিসিএফ রাজেন্দ্র জাখর-সহ সেনা প্রশাসনের বিভিন্ন আধিকারিকেরা। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়া এনসিসি ক্যাডেটরাও যুদ্ধ মহড়া এবং অস্ত্র প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন।