দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের।—ছবি সংগৃহীত।
আচার্য তথা রাজ্যপালের দফতর থেকে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানানো হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলের পরে, সে খবর আচার্যের নির্দেশিকার প্রতিলিপি-সহ সমাজ মাধ্যমেও ছড়িয়েও যায়। তবে শুক্রবার সৌরেন উপাচার্য পদে যোগ দেননি। বেশ কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য পদে যোগ দিতে তিনি অপারগ বলে এ দিন আচার্যের দফতরে জানিয়েছেন।
চিঠিতে সৌরেন বলেছেন, ‘আমাকে উপাচার্য হিসাবে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও আপনার (আচার্যের) সদয় ইচ্ছা অনুযায়ী আমি এই সুযোগ গ্রহণ করার অবস্থায় নেই’। উচ্চ শিক্ষা দফতরকে না জানিয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল সরাসরি উপাচার্যদের নিয়োগের চিঠি দেওয়ায় রাজ্য বনাম রাজ্যপালের সংঘাত তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সৌরেনের ওই চিঠি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন অনেকে।
বৃহস্পতিবার যে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যেরা আচার্যের কাছ থেকে সরাসরি নিয়োগের চিঠি পেয়েছেন, তাঁদের ওই পদ প্রত্যাখ্যানের জন্য ‘সসম্মান অনুরোধ’ জানান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ওই ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই আইন না মেনে ওই নিয়োগ হয়েছে বলে বৃহস্পতিবারই অভিযোগতুলেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
এর পরে, এ দিন সৌরেনের ওই দায়িত্ব নিতে না চাওয়ার চিঠির পিছনে সে ঘটনার কোনও প্রভাব রয়েছে কি না, তা নিয়ে চলছে চর্চা। তার আর একটি কারণ, সৌরেন চিঠিটির প্রতিলিপি আচার্যের দফতরের পাশাপাশি, রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব এবং দফতরের মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবকেও পাঠিয়েছেন। সৌরেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় এ ব্যাপারে তাঁর মত জানা যায়নি। মেসেজরও উত্তর মেলেনি।
দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তথা বালুরঘাট কলেজের অধ্যক্ষ পঙ্কজ কুন্ডু এ দিন বলেন, ‘‘নতুন উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে আমার কাছে আচার্য বা উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে কোনও ই-মেল আসেনি।’’ দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য পদে যোগ দিতে না চেয়ে সৌরেনের আচার্যকে চিঠি দেওয়ার বিষয়েও তাঁরা অন্ধকারে।
দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় মার্চ মাস থেকে উপাচার্যহীন। তার জেরে সমস্ত কাজ আটকে গিয়েছে। আটকে গিয়েছে কর্মচারীদের বেতন। দু’বছরেরছাত্রছাত্রীদের ফলও প্রকাশ হয়নি। ওই সমস্যার কথা উচ্চ শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে আগেই। এই পরিস্থিতির জেরে, অনেক ছাত্রছাত্রী দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে গিয়েছেন বলেওঅভিযোগ।