উদয়ন গুহ। ফাইল ছবি।
বাম আমলে চাকরি-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নিজের প্রয়াত পিতা কমল গুহকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। তা নিয়ে বিরোধীরা সমালোচনায় সরব হওয়ায় এ বার সরাসরি হুঁশিয়ারি দিলেন মন্ত্রীপুত্র। বাবা প্রকাশ্যে দাদুকে নিয়ে মন্তব্য না করলেই পারতেন বলে প্রাথমিক ভাবে নিজের মতামত জানালেও তীব্র নিন্দার মুখে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিলেন সায়ন্তন গুহ। তিনি বলেন, ‘‘উদয়ন গুহের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার সময় তথ্যপ্রমাণ দেখাতে না পারলে কোর্টে দেখা হবে।’’ এ নিয়েও পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধীরা।
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বাম জমানার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে শুরু করেছেন শাসক তৃণমূলের নেতারা। এই পরিস্থিতিতে বাবা তথা প্রাক্তনমন্ত্রী কমল গুহকেও ছাড়েননি তৃণমূল সরকারের মন্ত্রী উদয়ন। তা নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের মুখে সায়ন্তনের সমাজমাধ্যমের পোস্ট ঘিরে প্রাথমিক ভাবে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। সায়ন্তন ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘‘এই বর্তমান পরিস্থিতিতে দাদুর প্রসঙ্গ না এলেই ভাল হত। মাই ফার্স্ট হিরো কমল গুহ।’’ তবে বাম আমলে দলীয় কর্মীদের কোটায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ বার বার উঠছে, তাতেই জোর দিয়ে বাবার পাশে দাঁড়িয়েছেন সায়ন্তন। এ বার তাঁর হুঁশিয়ারি, উদয়নের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ ছাড়া অভিযোগ তোলা হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।
বৃহস্পতিবার দিনহাটায় সাংবাদিক বৈঠকে মন্ত্রীপুত্র বলেন, ‘‘আজকের পর থেকে উদয়ন গুহের বিরুদ্ধে কেউ দুর্নীতির কথা বললে প্রমাণ হাতে নিয়ে বলবেন। প্রমাণ করতে না পারলে সোজা কোর্টে দেখা হবে। যাঁরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন, তাঁদের সাত দিন সময় দিচ্ছি সংবাদমাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার জন্য। নয়তো প্রমাণ হাতে রাখুন। কারা কী বলেছেন, সব রেকর্ড রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই আইনি পদক্ষেপ করব। অনেক দিন ধরে সহ্য করছি।’’
সায়ন্তনের এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে জেলা বিজেপির সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যের মানুষ জানেন, বীজ কেলেঙ্কারির নায়ক কে? উদয়ন গুহ নিজেই স্বীকার করেছেন, ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক থাকাকালীন উনিও অনেক দলীয় কর্মীকে চাকরি দিয়েছেন। সায়ন্তন গুহ আগে তাঁর বাবাকে প্রশ্ন করুন, তিনি দুর্নীতি করেছেন কি না!’’ কোচবিহার জেলা ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক অক্ষয় ঠাকুর বলেন, ‘‘বাবার হয়ে ছেলে দাঁড়াবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কমল গুহ বাম আমলে দুর্নীতি করেছেন, এই প্রমাণ কি উদয়ন গুহের কাছে আছে? সে ক্ষেত্রে তো আমরা আদালতে যেতে পারি। উদয়ন গুহ বীজ কেলেঙ্কারির করেছেন কি না, তা চৌধুরীহাটের মানুষ বলবে। চৌধুরীহাটের মানুষ গম পোড়ালো কেন? গমের গাছ তুলে পুড়িয়ে ফেলল কেন? কেন বীজ হল না, তার জবাব কে দেবে? এটার জবাব আগে দিক, তার পর সাত দিনে কে ক্ষমা চায়, দেখা যাবে।’’