জলপথ: বন্যায় ডুবেছে জনপদ। জল ভেঙেই যাতায়াত। সোমবার বালুরঘাটের আখিরাপাড়ায়। নিজস্ব চিত্র
পুণর্ভবা চরম বিপদসীমা ছাড়াতেই বাঁধ ভাঙল গঙ্গারামপুরে। সোমবার সকালে বেলবাড়ি ১ গ্রামপঞ্চায়েতের মোহিনীপাড়া এলাকায় প্রায় ২০ মিটার এলাকা জুড়ে নদীবাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করেছে। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুণর্ভবা চরম বিপদসীমার দেড় মিটার উপর দিয়ে বইছে। তার ফলে গঙ্গারামপুরের পাশপাশি তপন ব্লকের বজ্রাপুকুর, যাদববাটি এলাকায় পুণর্ভবার নদীবাঁধ ভেঙে জল ঢুকছে।
পুনর্ভবার বাঁধের বেহাল অবস্থা নিয়ে এ দিন সরব হন গঙ্গারামপুরের পুর-কর্তৃপক্ষ। পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল পুরপ্রধান তথা প্রশাসক অমলেন্দু সরকার অভিযোগ করেন, বর্ষার আগে সেচ দফতর থেকে বাঁধ মেরামত করা হলে পরিস্থিতি এমন হত না। গঙ্গারামপুর শহরের ৬০ শতাংশ এলাকা জলমগ্ন বলে তিনি দাবি করেন।
সেচ দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার স্বপন বিশ্বাস জানান, বেলবাড়ির মোহিনীপাড়া এলাকায় ভেঙে যাওয়া পুণর্ভবার বাঁধ মেরামতি শুরু হয়েছে। তপনের বজ্রাপুকুর, যাদববাটি ও অন্যান্য এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত নদীবাঁধ মেরামতির কাজ শেয হয়েছে। জেলায় নতুন করে বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। অন্য দিকে বালুরঘাটে আত্রেয়ীর জলস্তরও বেড়েছে। সোমবার আত্রেয়ী বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। জল ক্রমশ বেড়ে চলেছে বলে সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
শহরবাসীর একাংশের দাবি, এ দিন সকাল থেকে শহরের বেলতলাপার্কের হরিভজন এলাকায় নদীবাঁধ ও স্লুইস গেট থেকে এলাকায় জল ঢুকছে। মেরামতির কাজও দ্রত শুরু করেছে সেচ দফতর। বালুরঘাটের চকভৃগু অঞ্চলের আখিরাপাড়া ও বেলাইন এলাকার রাস্তা ও ঘরবাড়ি ডুবে যাওয়ায় এলাকাবাসী সদর শহর বালুরঘাট থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। একাধিক বাসিন্দা বাড়ির ছাদে ত্রিপল টাঙিয়ে রয়েছেন। আখিরপাড়ার সালিনি সিংহ, প্রদীপ বর্মণ জানান, তাঁরা দু’দিন ধরে বাড়ির ছাদে উঠে রয়েছেন।
বেলাইনের বাসিন্দা রবি বর্মন, সুরচি মণ্ডল দু’দিন জলবন্দি থাকার পরে এ দিন ত্রাণ নিতে এক বুক জল ভেঙে আখিরাপাড়া স্কুলের ত্রাণশিবিরে পৌঁছন। জেলাশাসক নিখিল নির্মল জানান, জেলার বন্যাদুর্গত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
অন্য দিকে, এক রাতের মধ্যে নদীর জল বেড়ে ঘরবাড়ি ডুবে গেল। বালুরঘাটের বোয়ালদার অঞ্চলের নদী সংলগ্ন খাসপুর এলাকায়। বানভাসি এলাকার বাসিন্দা পিন্টু সরকার জানান, রবিবার রাতের মধ্যে আত্রেয়ীর নদীর জল ঢুকে ঘরবাড়ি ডুবিয়ে দিয়েছে। গৃহস্থালির কোনও জিনিসপত্রই বাঁচাতে পারেননি তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এলাকার ৩০টি পরিবার রাস্তার উপর ঠাঁই নিয়ে রয়েছেন।