প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরের প্রবীণ লেখক গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য সম্প্রতি তাঁর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে লেখেন- ‘টানা ১০ দিন ধরে বৃষ্টি। একেবারে শৈশবকাল ফিরে এল। দু’দিন আগে বৃষ্টিতে ভিজে চুপসে বাড়ি ফেরার পর সে যে কী আনন্দ। বয়সটা ঝপ করে কমে গেল!’ একই কথা বলছেন শহরের অনেকেই। দীর্ঘ দিন পরে শিলিগুড়িতে এমন টানা বৃষ্টি হয়েছে। একই পরিস্থিতি জলপাইগুড়ি শহরেও।
পুরনো তথ্য ঘেঁটে আবহাওয়া দফতর বলছে, গত ১৫ বছরের তুলনায় রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ১-১৫ জুলাইয়ের হিসেবে দুই শহরের বৃষ্টির পরিমাণ ৭০০ মিলিমিটার ছাপিয়ে গিয়েছে। যা গত পনেরো বছরের রেকর্ড। হিমালয়ের পাদদেশ বরাবর নিম্নচাপ অক্ষরেখা বা মৌসুমী অক্ষরেখা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে থাকায় এই রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। আপাতত দিন দুয়েক বৃষ্টি কম হলেও আগামী ২ মাসে আবার জোর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদেরা।
দফতরের হিসাব বলছে, জুলাইয়ের প্রথম দুই সপ্তাহে শিলিগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৭০৩ মিলিমিটার। আর জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি হয়েছে ৭২৮ মিলিমিটার। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পর্যবেক্ষণ করার স্টেশনগুলোর তথ্য নিয়ে তা খতিয়ে দেখার পরে এমনই হিসাব এসেছে। ডুয়ার্স, সিকিম, দার্জিলিং, কালিম্পংয়েও বৃষ্টি বেড়েছে। স্বাভাবিকের থেকে ৫৫-৬০ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘জুলাইয়ের প্রথমে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরে গত ১৫ বছরে টানা এতটা বৃষ্টি হয়নি।’’
এ বছর উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢুকেছে জুনের শেষে। নিম্নচাপ বা মৌসুমী অক্ষরেখা যথন হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছয়, তখন এই এলাকায় বর্ষা শুরু হয়। তারপরে মৌসুমী অক্ষরেখা ধীরে ধীরে উত্তরের দিকে এগোতে থাকে। তা রাজস্থান পৌঁছনোর পরেই গোটা দেশে বর্ষা জাঁকিয়ে বসেছে বলে আবহাওয়াবিদেরা জানান। এ বার তা এখনও রাজস্থানকে ছুঁয়ে দেখেনি। বেশি সময় হিমাললয়ের পাদদেশেই থাকছে। তাতেই হিমালয়ের কোলে থাকা তরাই, ডুয়ার্সে বৃষ্টি বাড়ছে। মঙ্গলবার বৃষ্টি কমলেও বুধবার দুপুরে ফের শিলিগুড়িতে নিম্নচাপ জাঁকিয়ে বসে। ঘন্টা দু’য়েকের বৃষ্টিতে ভেসেছে গোটা শহর।