প্রতীকী ছবি।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের নার্সিং কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে কলেজ হস্টেলের শৌচাগার থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ এবং নার্সিং কলেজ সূত্রেই জানা গিয়েছে, মৃতের নাম মিতালি বর্মণ (২১)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে। পুলিশ জানায়, ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গত অক্টোবরে ভর্তি হন মিতালি। নভেম্বর থেকে ক্লাস শুরু। ২৮ নভেম্বর ছাত্রীটির মা মারা যান। বাবা রতন বর্মণ আলাদা থাকতেন। মা এবং ঠাকুমার সঙ্গে বাড়িতে থাকতেন ছাত্রীটি। তবে বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হত। মায়ের মৃত্যু, পারিবারিক কিছু সমস্যার জেরে হতাশা ও অবসাদে ছিলেন বলে সকলের ধারণা। তবে তা কর্তৃপক্ষ কখনও বুঝতে পারেননি বলে দাবি।
পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার রাতে হস্টেলের বান্ধবীদের স্নানে যাওয়ার কথা বলে শৌচাগারে যান মিতালি। অনেকক্ষ ণ পরেও তিনি বেরোচ্ছেন না দেখে ডাকাডাকি শুরু হয়। সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভিতরে শাওয়ারের পাইপে ওড়নার ফাঁসে তাঁকে ঝুলতে দেখা যায়। মেডিক্যাল কলেজের ফাঁড়িতে খবর দেওয়া হয়। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃতদেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।
খবর পেয়ে মেয়েটির বাবা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে আসেন শনিবার। কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, অভিভাবকের থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন, একটি ছেলের সঙ্গে তাঁর রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়েছে। সেই যুবক অফিসের কাজে বেঙ্গালুরুতে থাকেন। খবর পেয়ে তিনিও এ দিন চলে আসেন। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজের পড়ুয়াদের ‘ল্যাম্প লাইটিং’ কর্মসূচি ছিল। তা আপাতত বাতিল করেছেন কর্তৃপক্ষ। নার্সিং কলেজের অধ্যক্ষ সুতপা দত্ত বলেন, ‘‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। সব পড়ুয়াদের আমরা মেয়ের মতো স্নেহে দেখি। এই ঘটনা আমরা মেনে নিতে পারছি না।’’
কলেজ সূত্রে খবর, মা মারা যাওয়ার পরে ১৭ দিন ছুটি নিয়ে বাড়ি যান ছাত্রীটি। ফিরে এসেও তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন বলে ধারণা কর্তৃপক্ষের। অধ্যক্ষা জানান, যে ছেলেটির সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল, রাতে তাঁর সঙ্গেই ফোনে শেষ কথা হয় বলে সহপাঠীদের থেকে জেনেছেন কর্তৃপক্ষ। পুলিশকে তা জানানো হয়েছে। মেয়েটির বাবা বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ওর সঙ্গে শেষ কথা হয়েছে। কিছু অস্বাভাবিক খেয়াল করিনি। কী হল বুঝতে পারছি না!’’