উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে গ্রেফতার অভিযুক্ত ও তাঁর আত্মীয়। —নিজস্ব চিত্র।
ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে উত্তরবঙ্গ মে়ডিক্যাল কলেজে কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন এক যুবক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালই ধরিয়ে দিল অভিযুক্তকে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। ২৫ বছরের ওই যুবক রায়গঞ্জের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার তিনি গিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে কাজে যোগ দিতে। হাতে ছিল গ্রুপ ডি পদে চাকরির একটি নিয়োগপত্র। এক ঝলক দেখলে বোঝার উপায় নেই সেটি ভুয়ো। কিন্তু নথি যাচাইয়ের সময় ওই নিয়োগপত্র দেখে সন্দেহ হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ চিকিৎসক ইন্দ্রজিৎ সাহার। তিনি খবর দেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের পুলিশ ফাঁড়িতে। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে অভিযুক্ত ও তাঁর আত্মীয়কে আটক করে এবং পরে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার তাঁদের আদালতে পেশ করা হবে।
রায়গঞ্জের বাসিন্দা ওই যুবক বৃহস্পতিবার এক আত্মীয়কে সঙ্গে নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে গিয়েছিলেন। তাঁর নিয়োগপত্রটি যাচাইয়ের জন্য জমা পড়তেই, সেটি দেখে সন্দেহ জাগে অধ্যক্ষের মনে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, নিয়োগপত্রের শেষের দিকে থাকা সই দেখেই প্রথম সন্দেহ দানা বাঁধে। তা ছাড়া, এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে তা স্বাস্থ্য দফতরের পোর্টালেও আপলোড করা হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা-ও ছিল না। ফলে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়। এর পর অভিযুক্ত ও তাঁর আত্মীয়কে সেখানে বসিয়ে রেখে মেডিক্যালের পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুলিশ এর পর দু’জনকে প্রথমে আটক করে এবং পরে গ্রেফতার করে পুলিশ সূত্রে খবর, জেরায় তাঁরা স্বীকার করেছেন দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে ওই ভুয়ো নিয়োগপত্র পেয়েছেন তাঁরা। এই প্রতারণার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
ঘটনাটি নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ বলেছেন, “ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে এসে চাকরি হাতানোর চেষ্টা করেছিলেন এক যুবক। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু এ বিষয়ে আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি। অধ্যক্ষের বক্তব্য, তদন্তের স্বার্থে এর থেকে বেশি কিছু বলা যাবে না।
প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজ্যের একাধিক প্রান্তে এই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছে। স্বাস্থ্য নিয়োগ পর্ষদের লোগো নকল করে টাকার বিনিময়ে ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পরে সেই ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে কাজে যোগ দিতে গিয়েই ধরা পড়ে যান তাঁরা। অতীতে কখনও মালদহ মেডিক্যালে, কখনও আবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এই ধরনের অভিযোগ উঠে এসেছিল। এ বার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের এই ঘটনা।