চিকিৎসা চলছে আক্রান্ত শিশুদের। নিজস্ব চিত্র
কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেই জ্বর,পেটখারাপ, খিঁচুনি-সহ নানা উপসর্গ নিয়ে ১২১ শিশু ভর্তি জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। এই ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি শয্যা বাড়িয়ে নতুন বিভাগ চালু করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে জলপাইগুড়ি সদর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি এবং কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ, হলদিবাড়ি থেকে বহু শিশু দফায় দফায় ভর্তি হয়েছে। তাদের সকলের প্রায় একই উপসর্গ। যদিও কারও শরীরেই করোনাভাইরাস মেলেনি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বহু শিশু সুস্থও হয়ে উঠেছে। যেমন রবিবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে ৪০-৫০টি শিশু। এই মুহূর্তে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২১টি শিশু।
অসুস্থ শিশুর সংখ্যা রাতারাতি বেড়ে যাওয়ায় আরও ৪০টি শয্যা বাড়িয়ে নতুন একটি বিভাগ চালু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা স্বাস্থ্য দফতর। শিশুদের মধ্যে জ্বর, ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ার কারণ হিসাবে আবহাওয়ার পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার রাহুল ভৌমিক বলেন, ‘‘মরশুম বদলের সময় শিশুদের জ্বর হয়। কোনও কারণে এ বার হয়তো একটু বেশিই হচ্ছে। জ্বর, সর্দি, কাশি। কারও আবার ডায়রিয়াও রয়েছে। আমরা সতর্ক আছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানিয়েছি।’’
এমন রোগে আতঙ্ক ছড়িয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে আসা সুচরিতা সরকার নামে এক মহিলা বললেন, ‘‘গত দু’দিন ধরে আমার ছেলের প্রচণ্ড জ্বর। ওষুধ দিলেও ২ ঘণ্টার আগে জ্বর কিছুতেই কমছে না। বাধ্য হয়েই হাসপাতালে এসেছি।’’ আয়েশা খাতুন নামে এক মহিলারও বক্তব্য, ‘‘শনিবার রাত থেকে আমার বছর দু’য়েকের ছেলের জ্বর। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তারবাবু ইঞ্জেকশন দেন। এখন জ্বর নেই।’’
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্তদের বয়স এক থেকে তিন বছরের মধ্যে। তাঁরা অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শই দিচ্ছেন। তাঁদের মতে, এই রোগে সুস্থতার হার বেশ ভাল। এখনও পর্যন্ত কোনও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছেন তাঁরা।