ধর্নায়: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে ইসলামপুরের অপ্সরা মোড়ে অবস্থান মহিলাদের। নিজস্ব চিত্র
নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে ধর্না শুরু হল চাকুলিয়ার কানকিতে, ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের বাসস্ট্যান্ডের পাশে।
শাহিনবাগের ধাঁচে সোমবার ওই অবস্থানে শামিল হন মহিলারাও। দিনভর অবস্থান মঞ্চ তদারকি করেন চাকুলিয়ার ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক আলি ইমরান রমজ (ভিক্টর)। ‘দেশ বাঁচাও সংবিধান বাঁচাও রক্ষা কমিটি’র ওই কর্মসূচির ধর্নামঞ্চ মুড়ে ফেলা হয় জাতীয় পতাকায়।
নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার জেরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের সুর সরব হয়েছে। ‘আজাদি’র দাবিতে পথে নেমেছে দিল্লির শাহিনবাগ। তার পরেই দেশের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি রাজ্যেও দেখা গিয়েছে শাহিনবাগের আদল। পথে নেমেছেন মহিলারাও।
এ দিন ওই অবস্থানে শামিল হন চাকুলিয়ার গৃহবধূ সাহিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘এমন আইন মানুষে মানুষে বিভাজন তৈরি করছে। তার প্রতিবাদ জানাতেই এসেছি।’’ এ দিন বিকেলে ধর্নামঞ্চে আসেন কানকির একটি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা রেশমা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘বিভাজনের নামে দেশকে সঙ্কটের মুখে ফেলা হচ্ছে। এটা তা-ই সংবিধান রক্ষারও লড়াই।’’ ধর্নামঞ্চে এ দিন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি অরাজনৈতিক সংগঠনের সদস্যরাও ছিলেন। ছিলেন চাকুলিয়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মহম্মদ মোস্তফা। গবেষক মহম্মদ আরশাদ মঞ্চে বলেন, ‘‘ধর্মের জিগির তুলে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ আসলে নিজেদের ব্যর্থতা চাপা দেওয়ার চেষ্টা। যুবসমাজের চাকরি নেই। সেই বাস্তব ভুললে চলে কী করে।’’
ধর্নামঞ্চে সিপিএম নেতা অশোক সিংহ বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি হিসেবে নয়, নাগরিক হিসেবে সংবিধান রক্ষা, নিজের নাগরিক অধিকারের লড়াইয়ে কথা বলতেই এসেছি।’’
তবে এ দিনের ধর্না অবস্থান ‘রাজনৈতিক’ বলে অভিযোগ তুলে তাতে শামিল হয়নি তৃণমূল। তৃণমূলের চাকুলিয়া ব্লক সভাপতি মিনহাজউল আরফিন আজাদ বলেন, ‘‘ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক রাজনৈতিক উদ্দেশেই এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন। তাই তাতে শামিল হইনি। তৃণমূল নতুন নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে সব সময় সরব।’’
তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে ভিক্টরের দাবি, ‘‘এই মঞ্চ অরাজনৈতিক। কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যানারে ওই কর্মসূচি করা হচ্ছে না। যাঁরা এনআরসি, এনপিআর এবং সিএএ-এর বিরুদ্ধে রয়েছেন, তাঁদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমিও এক জন আমন্ত্রিত। দলমত নির্বিশেষে সকলেই এতে শামিল হচ্ছেন।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী, সুভাষচন্দ্র বসু, অম্বেডকর, বিনয়-বাদল-দীনেশের মতো ব্যক্তিত্বের ছবি দেওয়া মূল মঞ্চে মঞ্চের চারপাশে এনআরসি, সিএএ-বিরোধী পোস্টারও। এ দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরে জাতীয় সঙ্গীতে শুরু হয় ধর্না কর্মসূচি। ‘আজাদি, হল্লা বোল, ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগানে সরব হয় মঞ্চ।
নতুন নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে অবস্থান চলছে ইসলামপুরেও। অপ্সরা মোড় এলাকায় মহিলারাও সেই অবস্থানে শামিল হন।