হোমের বিরুদ্ধে তদন্ত সিবিআই। — ফাইল চিত্র।
আত্মহত্যায় প্ররোচনা, ভুল তথ্য দেওয়া এবং প্রমাণ লোপাটের মতো ধারায় অভিযোগ দায়ের করে জলপাইগুড়ির কোরক হোমে নাবালকের মৃত্যুর তদন্তে নামল সিবিআই। গত ১০ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে সিবিআই একটি অভিযোগ দায়ের করে। সে মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে জেলা পুলিশ, কোরক হোম কর্তৃপক্ষ-সহ আরও অনেককে।
সূত্রের খবর, এসপি পদমর্যাদার এক সিবিআই অফিসারের দায়ের করা অভিযোগে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ অফিসার, জলপাইগুড়ির সরকারি কোরক হোমের ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ কর্তা হিসেবে সন্দেহভাজনদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’’
জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, নাবালককে মাদক মামলায় গ্রেফতার করার প্রক্রিয়ার তদন্ত করতেও নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট এবং সে গ্রেফতার জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানা করেনি, করেছিল কোচবিহার কোতোয়ালি থানা। জেলা পুলিশের ওই সূত্রের দাবি, অভিযোগ দায়ের করতে সিবিআইয়ের ভুলও হয়ে থাকতে পারে। সূত্রের দাবি, সোমবার নাবালকের মৃত্যুর তদন্তে জলপাইগুড়িতে পৌঁছেছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল। এই তদন্ত প্রক্রিয়ার পুরোটাই সিবিআই-এর দিল্লির অফিস থেকে পরিচালিত হচ্ছে। এ দিন তদন্তকারী দল দিল্লি থেকেই এসেছে বলে খবর।
সিবিআইয়ের তরফে এ দিনই মৃত নাবালকের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার কোচবিহার যাওয়ার কথা তদন্তকারী দলের। কোচবিহারেই নাবালকের দেহ কবর দেওয়া হয়েছে। কবরস্থানে আজ যেতে পারে সিবিআই। কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ির সার্কিটের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে জলপাইগুড়ির সরকারি কোরক হোমে নাবালকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই।
গত ১৫ ডিসেম্বর মাদক মামলায় বিচারাধীন আবাসিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় কোরক হোম থেকে। সে মৃত্যু নিয়ে একাধিক অভিযোগ তোলেন পরিবারের সদস্যেরা। কিশোর আবাসিকের জামিনের আবেদনের মামলাও সে সময় চলছিল জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে। হাই কোর্ট কিশোরের মৃত্যু নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করে। সে রিপোর্টে একাধিক অসঙ্গতির কথা স্বীকার করে নেন সরকারি আইনজীবীরাই। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে নাবালকের বয়স ৩৪ লেখা এবং ভুল তারিখের মতো নানা অসঙ্গতির কথা সিবিআই তদন্তের নির্দেশে উল্লেখ করে হাই কোর্ট।
গত শুক্রবার মামলার নথি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানা থেকে সংগ্রহ করেছিল সিবিআই। সূত্রের খবর, কোচবিহারে কবরস্থানে যাওয়ার পরে, সিবিআইয়ের দল জলপাইগুড়ি কোরক হোমে আসবে। কোরক হোমের আবাসিক এবং আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলবে তদন্তকারী দল।
এ দিন নাবালকের পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘সিবিআই আমাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেছিল। নানা তথ্য নিয়েছে। যা জানানোর, আমরা জানিয়েছি। কোচবিহারের বাড়ির ঠিকানাও নিয়েছে সিবিআই।’’