যে দুই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র।
মালদহের দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন খোদ বিডিও! প্রায় ৬৮ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগে দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন তিনি। সোমবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর।
মালদহের রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের কাহালা এবং বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ করেছেন রতুয়া এক নম্বর ব্লকের বিডিও। তাঁর অভিযোগ, ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজে তিনটি অর্থবর্ষ ধরে কয়েক লক্ষ টাকা তছরুপ হয়েছে। ২০১৮-’১৯, ২০১৯-’২০ এবং ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ৫১ লক্ষ টাকা এবং বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ১৭ লক্ষ টাকা তছরুপের অভিযোগ করা হয়েছে। বিডিওর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
১০০ দিনের কাজে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে প্রথম অভিযোগ আনেন গ্রামবাসীরা। এর পর ওই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে মালদহ জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর পর চলতি বছরের ২০ মে দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই গ্রাম রোজগার সহায়ককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। চাকরি থেকে বার করে দেওয়া হয় রতুয়া এক নম্বর ব্লকের তৎকালীন টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্টকে। সব মিলিয়ে দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ছ’জন কর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়।
এ বার দুর্নীতির অভিযোগে রতুয়া থানায় কালা এবং বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মীদের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করলেন রতুয়া ১ নম্বর ব্লকের বিডিও। কয়েক জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মালদহ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এক দিকে পুলিশ যেমন এই ঘটনার তদন্ত করছে, তেমনই এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ঘটনা তদন্ত করছে জেলা প্রশাসন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুর্নীতির কীর্তি সামনে আনার জন্য বিডিওকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পাশাপাশি তাঁদের কটাক্ষ, ‘‘যেখানে তৃণমূল সেখানেই দুর্নীতি। মানুষের টাকা নয়ছয় হচ্ছে। মানুষ এর হিসাব চাইবে। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে জবাবও তারা দেবে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া, অভিযোগের তদন্ত করেছে প্রশাসন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে তারাই ব্যবস্থা নেবে। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যাপার নয়।