মহারাষ্ট্রের জলগাঁওয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। ছবি: সংগৃহীত।
পুষ্পক এক্সপ্রেসের ভিতর আচমকাই শোরগোল। ‘আগুন লেগেছে, আগুন লেগেছে’! প্রত্যক্ষদর্শী এক যাত্রী জানালেন, যত নষ্টের গোড়া সেই চিৎকার। তার পরেই যাত্রীরা প্রাণভয়ে পাশের লাইনে নেমে পড়তে থাকেন। তখন তাঁদের চাপা দিয়ে বেরিয়ে যায় কর্নাটক এক্সপ্রেস। মহারাষ্ট্রের জলগাঁওয়ের ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন। আহত বেশ কয়েক জন। পাচোড়ার কাছে মাহেজি এবং পরধাড়ে স্টেশনের মাঝে হয়েছে দুর্ঘটনা। মুম্বই থেকে দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৪০০ কিলোমিটার।
এখনও সেই দৃশ্য মনে করলে শিউড়ে উঠছেন বিশাল যাদব। তাঁর হাঁটু থেকে রক্ত ঝরছে। সেই অবস্থায় একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘ট্রেনের চালক ব্রেক কষলে কয়েক জন যাত্রী চাকায় আগুনের ফুলকি দেখেন। তার পরেই রটে যায়, গাড়িতে আগুন লেগেছে। তখন যাত্রীরা ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে পাশের লাইনে নামতে থাকে।’’ যাঁরা নেমে পড়েছিলেন পাশের লাইনে, তাদেরই চাপা দিয়ে চলে যায় অন্য ট্রেন। কেন চালক ব্রেক কষেছিলেন, তা যদিও এখনও স্পষ্ট নয়। রেলের একটি সূত্র বলছে, ট্রেনের চেন টানা হয়েছিল। সে কারণে যাত্রীরা নামার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু কেন চেন টানা হয়েছিল, সেই নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
যাদব জানিয়েছিলেন, গুজব শুনেও তিনিও নামতে গিয়েছিলেন। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। যাদবের কথায়, ‘‘আমরাও ট্রেন থেকে নামতে শুরু করেছিলাম। তখন দেখি উল্টো দিক থেকে পাশের লাইনে ট্রেন আসছে। হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা। আমি সঙ্গে সঙ্গে আবার ট্রেনে উঠে পড়ার চেষ্টা করি। তাতেই আহত হয়েছি।’’
পিটিআইকে রেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পুষ্পক এক্সপ্রেসের একটি জেনারেল কামরা থেকে ধোঁয়া বার হচ্ছিল বলে শোনা গিয়েছে। প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, ‘ব্রেক বাইন্ডিং’-এর কারণে ওই ধোঁয়া বার হতে পারে।
মহারাষ্ট্রের মু্খ্যমন্ত্রী এখন দাভোসে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম’-এর সম্মেলনে রয়েছেন। সেখান থেকেই মৃতদের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। আহতদের চিকিৎসার ভারও তাঁর সরকার নেবে বলে জানিয়েছেন। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।া