নিজস্ব চিত্র
বেসুরো মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর থানার তৃণমূল পরিচালিত তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ১০ সদস্য ও দলের একাংশ। তাঁরা জানিয়েছেন, দলে থাকবেন। কিন্তু আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নেবেন না। কারণটাও বলেছেন স্পষ্ট করে। সম্প্রতি হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা অঞ্চলের নতুন অঞ্চল সভাপতি করা হয় মনোজ রামকে। তারপরেই তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে অভিযোগ করা হয়, ‘‘দলের নতুন অঞ্চল সভাপতি দুর্নীতিগ্রস্ত। চাকরি দেওয়ার নাম করে বেকার যুবকদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়েছেন! আর তাঁকেই সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তাঁদের হুঁশিয়ারি, ‘‘ওই নেতাকে অঞ্চল সভাপতি করা হলে গোটা পঞ্চায়েতকে নির্দল ঘোষণা করা হবে।’’ এর আগে মনোজ রামের একাধিক দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে উপরতলার নেতৃত্বকে জানানো হয়েছিল। তারপরেও তাঁকেই কেন অঞ্চল সভাপতি করা হল, প্রশ্ন তাঁদের।
যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনোজ রাম। তিনি বলেন, ‘‘এগুলো দল বিরোধী কথা। কিছু বলার থাকলে তাঁরা দলকে জানাবেন। অঞ্চল সভাপতি জেলা ও ব্লক নেতৃত্ব ঠিক করে। যাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হবে, তিনিই কাজ করবে। এটা কোন বড় সমস্যা নয়। ব্লক নেতৃত্ব বসে এই সমস্যার সমাধান করবেন।’’
১৭ আসনের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল কংগ্রেস ৪, বিজেপি ৬ ও বাম-কংগ্রেসের ৭টি আসন ছিল। কিন্তু বিজেপি বাদে সকলেই পরে শাসকদলে যোগ দেওয়ায় বোর্ড গড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রধান হন শকুন্তলা সিংহ ও উপপ্রধান হন মহবা বিবি। এর আগে তুলসিহাটা অঞ্চলে তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন মনোজ রাম। জেলায় সব কমিটি ভেঙে দেওয়ার পর ফের নতুন কমিটি তৈরি হয়। তুলসিহাটায় মনোজকে সভাপতি করা হয়।
বর্তমান পঞ্চায়েত সদস্যদের অভিযোগ, মনোজের মতো দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা এলাকায় আর কেউ নেই। পঞ্চায়েতের পাশাপাশি স্থানীয় নেতৃত্বের তরফে মনোজকে সভাপতি যাতে না করা হয় তা জানানো হয়েছিল। মনোজ বাদে যে কাউকে তাঁরা মেনে নেবেন বলেও নেতৃত্বকে বলেছিলেন তাঁরা! তারপরেও মনোজকে সভাপতি করা হয়েছে জানতে পেরেই বিদ্রোহ শুরু হয় দলের অন্দরে।
প্রধান শকুন্তলা সিংহ বলেন, ‘‘মনোজের জন্য এলাকার মানুষ তৃণমূলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। উনি অনেকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছেন। মনোজ সামনে থাকলে, নির্বাচনে কী ভাবে মানুষের কাছে ভোট চাইতে যাব? তাই উনি পদে থাকলে আমরা নির্দল হয়েই মানুষের কাছে ভোট চাইব।’’
তৃণমূলের জেলার কো-অর্ডিনেটর হেমন্ত শর্মা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমরা স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব! ব্লক নেতৃত্ব সমস্যা না মেটাতে পারলে কী ভাবে সমস্যা মেটে তা জেলা নেতৃত্ব দেখবে।’’