হাতির তাণ্ডবে ভাঙল বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
শীতের গভীর রাতে হাতির তাণ্ডব ডুয়ার্সের হলদিবাড়ি চা বাগানের মণিপুর লাইনে। ঘর-দোকান ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি হাঁড়িয়া ভর্তি হাঁড়ি শুঁড়ে করে নিয়ে চম্পট দিয়েছে ওই দলছুট হাতিটি। এর জেরে শীতের রাতে খোলা আকাশের নীচে দিন কেটেছে সেখানকার বাসিন্দাদের। হাতির হানায় যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।
সোমবার গভীর রাতে পাশের মোরাঘাট জঙ্গল থেকে দলছুট হাতিটি বেরিয়ে এসেছিল বলে অনুমান। খাবারের লোভেই সে তাণ্ডব চালায়। যার জেরে ৭টি বাড়ি এবং ২টি দোকান গুঁড়িয়ে গিয়েছে। গভীর রাতে দলছুট হাতি যখন তাণ্ডব চালায়, সেই সময় গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলেন বাগানের বাসিন্দারা। দোকানের দেওয়াল ভেঙে হাতি ঢুকলে কোনও মতে পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন দোকানের মালিক রাজু ওঁরাও। ওই দোকানের চাল, আটা খেয়ে পাশের বাড়িতে হানা দেয় হাতিটি। সেখানে প্রেম বড়াইক নামে এক গ্রামের বাসিন্দার বাস। সেই ঘরের মধ্যেই মজুত ছিল হাঁড়িয়া। ঘর ভেঙে হাঁড়িয়া ভর্তি হাঁড়ি নিয়ে চম্পট দেয় হাতিটি। কিছু দূর গিয়ে তা সাবাড় করে দেয় বলেও জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর পর মত্ত হাতি তাণ্ডব চালায় মণিপুর লাইনে। সেখানে এক এক করে প্রায় ৭টি বাড়ি ভেঙে দেয় সে।
এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাঁরা বাইরে বেরিয়ে দেখেছেন দলছুট হাতিটি দাঁড়িয়ে রয়েছে। তার পর এক এক করে ঘর ভাঙতে শুরু করে সে। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে সবাই চা বাগানে লুকিয়ে পড়েছিলেন।
চা বাগান শ্রমিকদের অভিযোগ, বন দফতরের কাছে আবেদন করেও ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না। এমনকি, বাগানে হাতি ঢুকে পড়লে বন দফতরকে খবর দেওয়া হলেও অনেক দেরিতে আসেন তাঁরা। এ দিন তাই আর বনকর্মীদের খবর দেননি বাগানের শ্রমিকরা। নিজেরাই ট্র্যাক্টর নিয়ে হাতি তাড়িয়ে জঙ্গলে ফেরত পাঠান তাঁরা।
বিন্নাগুড়ি বন্যপ্রাণী স্কোয়াডের রেঞ্জার শুভাশিস রায় বলেন, "প্রায় প্রতি রাতেই হাতি কোনও না কোনও বাগানে ঢুকে পড়ছে। বনকর্মীরা আগের রাতেও নাথুয়া এলাকায় হাতি তাড়াতে ব্যস্ত ছিলেন। মূলত নেশার পানীয় হাতির খুব পছন্দের। সেই সময় হলদিবাড়ি চা-বাগানে হাতি ঢুকে থাকলেও থাকতে পারে। তবে, আমাদের কিছু জানানো হয়নি।"