BJP

বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের নালিশে চাঞ্চল্য

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণীও যুব মোর্চার একজন রাজ্য নেত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি ও শামুকতলা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০২০ ০৬:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

দলেরই এক যুব নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি যুব মোর্চার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক মিঠু দাসের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে আলিপুরদুয়ারের বারবিশায়।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযোগকারিণীও যুব মোর্চার একজন রাজ্য নেত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে জলপাইগুড়ি মহিলা থানায় ওই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। শুক্রবার পুলিশ অভিযোগকারিণীকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তাঁর শারীরিক পরীক্ষাও করা হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। অভিযুক্ত ওই নেতার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। দলের অভ্যন্তরেও এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বাড়ি আলিপুরদুয়ার জেলার বারবিশা সংলগ্ন ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চিকলিগুড়ির তিলেরডাঙা গ্রামে। কোচবিহারের এক হাইস্কুলের শিক্ষক এই যুব নেতা। সাত মাস আগে তাঁর বিয়ে হয়েছে বলে পরিবার সূত্রের খবর। ওই যুব নেতার বাবা মদন দাস এলাকায় সিপিএমের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাঁরা সপরিবার বিজেপিতে যোগ দেন। অভিযুক্তের মা বিজেপির টিকিটেই ভাটিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য নির্বাচিত হন। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেত্রী হিসেবেও তিনি পরিচিত।

Advertisement

শুক্রবার অভিযুক্তের মা ও স্ত্রীকে শামুকতলা থানায় ডেকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পরে তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়েছে।” অভিযুক্তের বাবা মদন দাস বলেন, “ছেলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যা। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।”

অভিযুক্তের বিরুদ্ধে দলীয় নেতৃত্বের কাছেও অভিযোগ জানানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। অভিযুক্ত মিঠু নানা অনৈতিক কাজকর্মের সঙ্গেও যুক্ত বলে দলের অভ্যন্তরে খবর। পুলিশ সূত্রের খবর, গত বছর ৩ মার্চ অভিযোগকারিণীকে কোচবিহারে ধর্ষণ করেন অভিযুক্ত। এরপর অভিযোগকারিণীর উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয় বলেও। অভিযোগকারিণী নেত্রী সোশ্যাল মিডিয়াতেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। ওই নেত্রীর আরও অভিযোগ, গত বুধবার রাতে তাঁকে অভিযুক্ত প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেন। অভিযোগ, অভিযুক্ত নেতা ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা বাগান ও বনবস্তি এলাকার নাবালিকাদের উপরেও শারীরিক নির্যাতন চালাতেন।

জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী জানান, পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার পরই পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তিনি জানান, অভিযুক্ত পলাতক। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।

বিজেপির যুব মোর্চার জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি শ্যাম প্রসাদ এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে এখনও পর্যন্ত দলের কাছে কোনও অভিযোগ আসেনি। অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখছি আমরা।”

অভিযুক্ত যুব নেতা মিঠুকে বৃহস্পতিবারও ডুয়ার্সের বানারহাটের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে এক দলীয় কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে বলে খবর। দলীয় সূত্রের খবর, বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক এবং আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লার সঙ্গে অভিযুক্তকে দেখা গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement